রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশে মাদক বিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি কতটুকু কার্যকর! 

নিজস্ব প্রতিবেদক: উত্তর বঙ্গের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। করোনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ফাঁকা ক্যাম্পাসে মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ফেনসিডিল, বিয়ারসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের খালি বোতল দৃষ্টিগোচর হলে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরী সভা ডেকে ক্যাম্পাসকে মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করে। কিন্তু এই নীতি গ্রহণ করার পরও ক্যাম্পাসে কমেনি মাদকের ছড়াছড়ি। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ক্যাম্পাসকে মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে মাদকসেবীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষর্থীরা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগতরাও ক্যাম্পাসের ভেতরে মাদক সেবনে জড়িত।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিশ চত্বর, সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, পশ্চিমপাড়া, নবাব আব্দুল লতিফ হলের মাঠ, শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঠ, তুঁতবাগান, বিশ্ববিদ্যালয় কবরস্থান, চারুকলা ও কৃষি অনুষদ সংলগ্ন মাঠসহ রাস্তার পাশে মাদকদ্রব্যের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। আরও একটু বাড়িয়ে বলে অত্যুক্তি হবে না “রাজশাহীর এমন কোন ফাঁকা স্থান নেই যেখানে ফেনসিডিল বা দেশীয় কোন মাদকের খালি বোতল পড়ে নেই “বিশেষ করে প্রাকৃতিক কর্ম সারার জায়গায় ফেনসিডিলের খালি বোতল চোখে পড়বেই। প্রশাসন সময়ে সময়ে ‘মাদকবিরোধী অভিযান’ পরিচালনা করলেও কমছে না মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গার্ড, কর্মচারি মাদক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের মাধ্যমেই মাদকগুলো ক্যাম্পাসে ঢুকছে। এর আগে বিভিন্ন হল গার্ডের বিরুদ্ধে মাদক ব্যাবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। অথচ সবসময় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িতপ্রাপ্ত) অধ্যাপক লুৎফর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ক্যাম্পাসে মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিগ্রহণ করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকায় কয়েকজন কর্মচারিকে ইতোমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মাদক নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ক্যাম্পাসে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।এইতো গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।
এবার আসুন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে গ্রামগঞ্জে চোখ খুলে দেখলে দেখা যায় চতুর্দিকে ঘিরে রয়েছে মাদক। শুধু বেচাকেনার সিস্টেম বদল হয়েছে মাত্র।আগে মাদকসেবীরা যেত স্পটে মাদক নিতে আর এখন মাদকই চলে আসছে সেবনকারীদের কাছে। বলা যায় মাদক এখন হোম সেলে পরিণত হয়েছে শহর অঞ্চলগুলোতে।
মহানগরীর বাইরের চিত্র ভিন্ন বিশেষ করে পুঠিয়া, বাঘা,চারঘাট অঞ্চলগুলোতে অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ফেনসিডিল। সেবনকারীদের ধরে কিছু আদায়ের জন্য স্পট থেকে সামান্য দূরে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখা যায়। অথচ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্রেতাদের কাছে যাচ্ছে না।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.