রাজশাহী বিভাগে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিভাগে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মৃত্যু সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনটি করোনা ওয়ার্ড আইসিইউ ও কেবিনে ঠাই নেই অবস্থা।
এক হিসাবে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে করোনা ও উপসর্গে রামেক হাসপাতালে মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রামেক হাসপাতালের সূত্র মতে ৩ এপ্রিল থেকে রোববার ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এই ২৪ জনের মৃত্যু হয়। উপসর্গ নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের করোনা পরীক্ষা হয়। ঢাকা থেকেও লাশ হয়ে ফিরেছেন ডাক্তারসহ ক’জন।
সূত্রমতে, গত ৩ এপ্রিল করোনায় মারা যায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শামীমা ফেরদৌস শিমুল (৪৭)। গত ৬ এপ্রিল তিন জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে দুইজন আইসিইউতে এবং একজন করোনা ওয়ার্ডে মারা যায়। ৭ এপ্রিল ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের আইসিইউতে তারা মারা যান।
মৃত ব্যাংক কর্মকর্তার নাম মাহাবুল ইসলাম (৪৫)। বানেশ্বর ইউনিয়নের নামাজগ্রাম এলাকার মৃত জেকের আলীর ছেলে। ৮ এপ্রিল করোনার উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতের বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে আইসিইউতে একজন এবং ২৯ ও ৩০ নম্বর করোনা ওয়ার্ডে চারজন মারা যান। মৃতরা হলেন, আবুল হোসেন (৫০), মিলন (৬৬), আব্দুল কুদ্দুস (৭৩), আব্দুল মালেক (৬৮), শরিফুল ইসলাম (৭২)।
গত ৯ এপ্রিল করোনার উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতের বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়। ১০ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ওইদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউতে তাদের মৃত্যু হয়। যে পাঁচজন মারা গেছেন, তাদের শ্বাসকষ্টসহ করোনার সব উপসর্গ ছিল।
মৃতরা হলেন, নাটোরের নলডাঙ্গা এলাকার হাবিবুরের মেয়ে মনোয়ারা (৫০), গোদাগাড়ীর খেতুর গ্রামের কবিরাজের মেয়ে শ্যামলী (৩০), চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুহুল আমিন (৬০)। এদের মধ্যে শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে ৩০ নম্বর করোনা ওয়ার্ডে মনোয়ারা, করোনা আইসিইউতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্যামলী ও রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ২৯ নম্বর করোনা ওয়ার্ডে রুহুল আমিন মারা যান। অপর দুইজন শনিবার সকালে মারা যান।
গতকাল রোববার (১১ এপ্রিল) তিনজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত দুজন রয়েছেন। রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক (৬৫) ও অন্যজন সুবোধ কুমার তালুকদার (৪৫)। সুবোধের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আগরানবাজারে। এছাড়াও উপসর্গ নিয়ে আরো এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে রামেক হাসপাতালে নতুনভাবে গতকাল রোববার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৪০ জন ও উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬১ জন। আইসিইউতে ভর্তি আছেন ৯ জন। রামেক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে গতকাল রোববার বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে বিভাগের আট জেলায় এ পর্যন্ত ৪২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়।
এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৬৮ জনের মৃত্যু বগুড়ায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৯ জন মারা গেছেন রাজশাহীতে।
এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁয় ২৭ জন, নাটোরে ১৪ জন, জয়পুরহাটে ১১ জন, সিরাজগঞ্জে ১৮ জন এবং পাবনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিভাগে নতুন ২৭২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ দিন সুস্থ হয়েছেন ২৬ জন। বিভাগে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ত্রিশ হাজার। এদের মধ্যে ২৫ হাজার ১২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। বিভাগে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ২৪১ জন কোভিড-১৯ রোগী।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জি, এম হাসান সালাম (বাবুল) রাজশাহী। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.