রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকার অবৈধ যানবাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, শ্যালোর ইঞ্জিনচালিত নছিমন-করিমন, মাহেন্দ্রসহ ট্রাক্টর চলাচল নিষিদ্ধ। এরপরও রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কে অবাধে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে ধীরগতির এসব তিন চাকার যানবাহন দিয়ে। সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে সিএনজি ও লেগুনা।
এসকল যানবাহনে নেই কোনো হর্ন, সংকেত বাতি। এদের ব্রেক, স্টিয়ারিংসহ সবই ত্রুটিপূর্ণ। এ রুটের অধিকাংশ দূর্ঘটনার কারণই এসব অবৈধ যানবাহন। এতে প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনা। এদিকে ধীরগতির এসব যানবাহনের কারনে মহাসড়কে যান চলাচল বিঘিœতও হচ্ছে। বাস-ট্রাকের চালক তাদের কাঙ্খিত গতিতে চলতে পারছে না।
এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে বাড়তি সময়ও লাগছে। এসব যানবাহনের চলাচল বন্ধ করতে পবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি যথেষ্ট তৎপর না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে আজ বুধবার বিকালে দেখা যায়, মহাসড়কের পাশে বানেশ্বর ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সাথেই গড়ে উঠেছে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড। পুলিশের সামনে চলছে রুট পারমিট ছাড়া নম্বরবিহীন ১০ চাকার বালুবাহী ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরসহ অবৈধ সব যানবাহন। এ রুটে প্রতিদিন অন্তত ৫শ লেগুনা ও শতাধিক টেম্পু চলাচল করে। এদের অধিকাংশ গাড়ীর নেই ফিটনেস, রুটপারমিটসহ নম্বরপ্লেট ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স।
এ সময় মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ট্রাক্টর চালক আক্কাস আলী বিটিসি নিউজকে জানান, দেড় লাখ টাকায় ট্রাক্টরের বডি বানিয়েছেন। মহাসড়কে চলাচলে ঝুঁকি থাকলেও আয় বেশি হয়, তাই চলাচল করেন।
বানেশ্বর-পুঠিয়া রুটে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক গোপাল জানান, সংসার চালাতে তাকে অটোরিকশা চালাতেই হয়। পুলিশ বাধা দিলে সেদিন আর গাড়ী চালায় না।
হাসেম নামের চালক বলেন, ‘সরকার কড়াকড়ি করলে কয়েকদিন পুলিশের ধরপাকড় চলে। ঘুষ দিয়ে চলতে হয়। কিছু দিন পর আবার সব আগের মতোই চলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বৈধ-অবৈধ বলে কিছু নেই। হাইওয়ে পুলিশকে টাকা দিলে সব বৈধ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মাহেন্দ্রচালক বিটিসি নিউজকে বলেন, মহাসড়কে চলাচলে নিষেধের বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে যাই। এছাড়া আমরা অনেকটা হাইওয়ে পুলিশদের ম্যানেজ করেই গাড়ি চালাই। তা না হলে কি মহাসড়কে গাড়ি চালানো যায়?’
রাজশাহী থেকে ঢাকা ও বরিশাল রুটের দু’টি দূরপাল্লার বাসের চালক ও সুপারভাইজার বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যানবাহনের কোনো কমতি নেই। যে কারণে মাঝে মধ্যে দূর্ঘটনা ঘটে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ্ পিএএ বিটিসি নিউজকে বলেন, মহাসড়ক দিয়ে নছিমন-করিমন, ভটভটি চলাচল নিষিদ্ধ। মাহেন্দ্রের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নন তিনি। আদালতের রায় ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিগগিরই এসব যান চলাচল বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
পবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রবিউল আজম বিটিসি নিউজকে জানান, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে শক্ত অবস্থানে আছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুনশী শাহাবুদ্দীন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে নসিমন-করিমনসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। অবৈধ যেকোনো যানবাহন মহাসড়কে পেলে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাছাড়াও ‘পুলিশ তার কাজ করবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.