রাজশাহী অঞ্চলে টিসিবির পণ্য বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়নি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজশাহী অঞ্চলে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম এখনো পুরোদমে শুরুই হয়নি। সবমিলিয়ে ৩৯৭ জন ডিলারের মধ্যে ৩৮৭ জনই তোলেননি বরাদ্দকৃত পণ্য। গত বছর তালিকার মাত্র ১৪০ জন ডিলার পণ্য উত্তোলন করেছিলেন।

আর ১৯ জন ভ্রাম্যমাণ ডিলারের প্রত্যেকেই গত বছর ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করেছেন। এবার এ পর্যন্ত পণ্য বিক্রি করছেন মাত্র ১০ জন। এতে করে বিলুপ্ত হতে বসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। এর কারণ ডিলার তালিকার অসঙ্গতি। তবে বিদ্যমান অসঙ্গতি দূর করার প্রক্রিয়া চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গত ৬ মে থেকে একযোগে শুরু হয়েছে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম। শুরু থেকেই রাজশাহী নগরীর পাঁচটি, বগুড়া ও নাটোরের দুইটি করে এবং নওগাঁর একটি পয়েন্টে ট্রাক সেল চলছে। টিসিবির একটি জানায়, সবমিলিয়ে টিসিবি ডিলার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে ট্রাক সেল দেবেন ১৯ জন। এর বাইরে ২০ জন সমবায়ী ডিলার রয়েছেন।

ডিলার তালিকায় নির্ধারিত মুদি দোকানি রয়েছেন রাজশাহী নগরীতে ৭৯ এবং জেলায় ২৬ জন। এ ছাড়া বগুড়ায় ৬৬ জন, নওগাঁয় ৪৮ জন, পাবনায় ৪২ জন, সিরাজগঞ্জে ৪০ জন, নাটোরে ২৮ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২২ জন, জয়পুরহাটে ৭ জন। বিক্রি শুরুর ১১ দিনেও বরাদ্দকৃত পণ্য উত্তোলন করেননি এসব ডিলার।

টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয় জানায়, গত ৬ মে থেকে পণ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ডিলারদের অনুকূলে। ট্রাক প্রতি প্রতিদিনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৫শ’ কেজি পণ্য। এর মধ্যে ৭শ’ কেজি চিনি, ৬শ’ কেজি ডাল, ৭শ’ কেজি ছোলা এবং ৪শ’ লিটার সয়াবিন তেল। একসাথে তিন দিনের বরাদ্দ যাচ্ছে ট্রাকে।

অন্য দিকে ডিলারদের প্রত্যেককে প্রথম দফায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪শ’ কেজি চিনি, ৩শ’ কেজি ডাল, ৩শ’ কেজি ছোলা, ৪শ’ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১৫০ কেজি খেজুর। বরাদ্দের প্রথম কিস্তি উত্তোলনের সময়সীমা শেষ হবে আসামী ১১ জুন। এরপর দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ দেবে টিসিবি।

 

গতকাল থেকে কেজিতে ৫ টাকা কমিয়ে প্রতি কেজি মসুর ডাল ৫০ টাকা, ছোলা ৬৫ টাকা এবং ২০ টাকা কমিয়ে খেজুর ১০০ টাকায় বিক্রি করেছে টিসিবি। তবে আগের দামেই প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকায় এবং প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৮৫ টাকায় বিক্রি হবে। টিসিবির প্রতি কেজি পণ্য বিক্রি করে ডিলাররা কমিশন পাচ্ছেন সাড়ে ৪ টাকা করে।

ডিলাররা দাবি করে আসছিলেন, শুরু থেকে বাজারে এসব পণ্যের দাম প্রায় কাছাকাছিই ছিল। তারা জানান, একে তো বাজারদর কম, তার সাথে থাকছে পরিবহণ খরচ। এ ছাড়া পণ্যের মান নিয়ে ভীতি থাকায় ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ নেই টিসিবির পণ্যে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় পণ্য উত্তোলন বন্ধ রেখেছেন ডিলাররা।

বাজার পরিস্থিতি দেখে পণ্য উত্তোলন করবেন নিয়মিত ডিলাররা। এ ব্যাপারে নগরীর ভদ্রা এলাকার মেসার্স সাত্তার জেনারেল স্টোরের সংশ্লিষ্টরা জানান, পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় পণ্য উত্তোলনের কথা ভাবছেন তারা। তবে বাজার পরিস্থিতি দেখেই তারা পণ্য তুলবেন।

তবে ডিলাররা বরাদ্দকৃত পণ্য কেন উত্তোলন করছেন না- তার কারণ খুঁজে পাচ্ছে না সিটিবি। এ ব্যাপারে রাজশাহী টিসিবির কর্মকর্তারা বলছেন, তারা প্রত্যেক ডিলারকে এসএমএসের মাধ্যমে বরাদ্দের বিষয়টি জানিয়েছেন। আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত প্রথম কিস্তির পণ্য বরাদ্দ দেয়া হবে ডিলারদের মধ্যে। এখনো হাতে সময় হাতে রয়েছে। এ ছাড়া ডাল, ছোলা ও খেজুরের দামও কমেছে। তাই ডিলাররা পণ্য উত্তোলন করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.