রাজশাহীর সরকারি ওয়েবসাইট অনেকগুলি অকেজো, জনগণের দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারী) রাজশাহী সেটেলমেন্ট অফিসে খতিয়ান তুলতে এসে জানতে পারেন যে, মাস খানিক ধরে সার্ভার অফ, তাই খতিয়ান পেতে বিলম্ব হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারী কর্মকর্তা জানান, জন্ম নিবন্ধন সার্ভার প্রায় অনেক দিন থেকে বন্ধ,সার্ভারের কাজ চলছে, প্রতিদিনই মানুষ আসছে এবং কাংখিত সেবা পাচ্ছেন না।
এই রকম আরো উদাহরণ দেওয়া যায়। রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইট গুলোর অবস্থা এখনও বেহাল। তথ্যের গড়মিল কিংবা পুরনো তথ্য পড়ে থাকায় সেবাগৃহীতারা ভোগান্তিতে পড়ছেন।  ফলে তাৎক্ষণিকভাবে হালনাগাদ কাঙ্খিত তথ্য দেওয়া এসব সাইট ফেলছে ভোগান্তিতে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রাজশাহীতে মোট ৩৯৪টি সরকারি অধিদফতর বা প্রতিষ্ঠানের সাইট আছে। এসব সাইটের মধ্যে শুধুমাত্র রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আওতায় আছে ৪৮টি। এর বাইরে ৯টি উপজেলায় আছে আরও ৩১০টি।
এর মধ্যে পবায় উপজেলায় ৩১টি, দুর্গাপুর উপজেলায় ৩৪টি, মোহনপুরে ৩৫টি, চারঘাটে ৩৮টি, পুঠিয়ায় ৩৪টি, বাঘায় ৩১টি, গোদাগাড়ীতে ৩৬টি, বাগমারায় ৩৭টি এবং তানোরে ৩৪টি ওয়েবসাইট আছে। প্রতিটি দপ্তরে এসব ওয়েবসাইটের জন্য রাখা আছে একজন করে লোক। এছাড়াও একজন আইটি অফিসারও নিয়োগ দেওয়া আছে এগুলো দেখভালের জন্য।
গত এক মাসে রাজশাহী এসব সরকারি ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তৈরী এসব সাইট কাজে আসছে না। অধিকাংশ ওয়েবসাইটেই তথ্য হালনাগাদ হচ্ছে না দিনের পর দিন।
সম্প্রতি ওয়েবসাইট হালনাগাদের নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয়-বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারপরও রাজশাহীতে পরিস্থিতির উন্নতি নেই। ইতোমধ্যে সার্ভারের ত্রুটিতে ডিসেম্বর মাসেই অন্তত দুইবার বন্ধ হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাইট।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর সাইটে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ‘পোর্টালের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে আপলোডের কাজ সম্পূর্ণ হবে। পোর্টাল ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়, রাজশাহীর সাইট সিটিজেন চার্টারই নেই।
এছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার কার্যালয়, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, কৃষি তথ্য সার্ভিস, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, পাট অধিদপ্তর, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যাান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, সামাজিক বন বিভাগ, জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, জেলা সঞ্চয় অফিস, ‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সাইটে নেই সেই আফিসে যোগাযোগের ঠিকানা।
এমনকি নেই গুগোল ম্যাপের লিংকও। কোনটিতে আবার সিটিজেন চার্টাট নেই। কোনটিতে আবার মন্তব্য করা যাচ্ছে না। কোনটিতে আবার নেই কর্মকর্তার ফোন নম্বরও। কোথাও কোথাও আবার সাইটেই প্রাবেশ করা যাচ্ছে না।
কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট আপলোড ও ভিজিটর বেড়ে যাওয়ায় ত্রুটি হয়েছে। শুধু তাই নয়, অতি সংবেদনশীল বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলোর সার্ভারেও সমস্যা দেখা দেয়ায় তা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। আবারও সেগুলো ফিরে আসে, কিন্তু সমস্যা থেকেই যায়।
সাইটট রক্ষাণবেক্ষণকারীরা জানিয়েছেন, সাইটগুলো যে সাইজের ছবি আপলোড হবার কথা সেগুলো হয় না। পাশাপাশি বড় আকারের ফাইল আপলোডের কারণে কনটেন্টের সমস্যা হচ্ছে। ফলে ভিজিটর সামলাতে সমস্যা হচ্ছে। কোন কোনটি আবার সর্ভারের কারণে বন্ধ আছে। কোন কোন অপশনে কাজ করছে না একই কারণে।
জানতে চাইলে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. কামরুজ্জামান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমার কোন কোন সাইট নষ্ট খারাপ অবস্থায় আছে সেগুলো জানান। পাশাপাশি আপনারা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও জানাবেন। তবেই আমারা এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারব।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.