রাজশাহীর প্রাচীন পুঠিয়ার আট নদী বিলুপ্তির পথে, চিহ্ন নেই চারটির

নিজস্ব প্রতিবেদক: দখল,দখল এবং দখল যেদিকে তাকাই শুধু দখল। অবশেষে নদীও দখল। এটা বাংলাদেশেই সম্ভব। ভারতের ফারাক্কার প্রভাবে অনেক ছোট নদী, আর নদী নেই। সেই চিহ্ন টুকু মুছে ফেলা হয়েছে অনেক স্থানে। তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পুঠিয়া। যা রাজশাহী শহর হওয়ার কয়েক শত বছর পূর্বে স্থাপিত হয়।
রক্ষণাবেক্ষণের ও কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে রাজশাহীর পুঠিয়ায় ছোট বড় আটটি নদী বিলুপ্তির পথে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় দখলদাররা নদী দু’পাড় কেটে নদীর বেশির ভাগ অংশ ফসলি জমিতে রূপ দিয়েছে।
বাকি অংশে দীর্ঘদিন থেকে পানি চলাচল না থাকায় তাও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন ও খরা মৌসুমে অধিকাংশ ফসলি জমিতে সেচ কাজে পর্যাপ্ত পানি সঙ্কট দেখা দেয়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক সময়ের গভীর খরস্রোত মুসাখাঁ, নারোদ, রায়চাঁদ, নিশানিশি, আইচাঁদ, সোকা, হোজা ও সন্ধ্যা নদী কালের গর্ভে প্রায় বিলিন হয়ে গেছে। অনেক স্থানে নদী গুলোর চিহ্ন পর্যন্ত নেই। তবে গত দু’বছর আগে নারোদ ও হোজা নদীর সংষ্কার করা হলেও পানি চলাচল না থাকা এবং বিভিন্ন স্থানে বাঁধের কারণে আবারও তা ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের তথ্যমতে এক সময় পুঠিয়া, নাটোর রাজপরগনাসহ পশ্চিম বাংলার কোলকাতা ও গাজীপুর রাজাদের রাজ্যর যোগাযোগ মাধ্যম ছিল এই নদীপথ। তাদের যাতায়াত ও পণ্য বহনে নদীগুলো ব্যবহার করা হতো। সে সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সওদাগররা নদী পথে বাণিজ্য করতো। জনশ্রুতি আছে মুসাখাঁ নদীর উপজেলার পানানগর এলাকায় খড়স্রোতে ধনপতি চাঁদ সওদাগরের কয়েক হাজার মণ মাল বোঝাই বাণিজ্যিক নৌকা ডুবে হারিয়ে যায়। অথচ বর্তমানে সে স্থানে পানিতো দূরের কথা নদীর কোনো চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায় না। অথচ কালের বিবর্তনে মূসাখাঁ নদীও বর্তমানে ফসলি জমি ও বাগ-বাগিচায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। অপরদিকে সুন্দর, পাবলই, বারনই, রায়চাঁদ নদীর বর্তমানে চিহ্ন পর্যন্ত হারিয়ে গেছে।
জানা গেছে, আশির দশকে রাজশাহীর পদ্মার শাখা বড়াল নদীর মুখে সুইজ গেইট নির্মাণ করা হয়। যার ফলে পুঠিয়ার মুসাখাঁসহ সকল নদী ও খালের পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিগত দিনে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মূসাখাঁ নদী পুনঃখনন ও সংষ্কারের নামে লাখ লাখ টাকা খরচা করলেও পানি চলাচল না থাকায় তার কোনো সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকরা। গত কয়েক বছরে সংষ্কারকৃত মুসাখাঁ পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.