রাজশাহীর চরশ্যামপুর বালুমহাল বুঝে পেলেন ইজারাদার, ক্ষতিপূরণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইজারা প্রাপ্তির দীর্ঘ ৫ মাস ১৬ দিন পর রাজশাহীর “চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর” বালুমহালটি ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হল। মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সকল মামলা নিষ্পত্তি শেষে এবং পদ্মায় বন্যার পানি কমার পর সাইফ ট্রেডার্সকে সরেজমীনে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান উপস্থিত থেকে এ বালুমহালটি বুঝিয়ে দেন।
জানা যায়, বালুমহালটির ১৪৩২ বঙ্গাব্দের সর্ব্বোচ্চ ইজারা ১৫,১৫,৭০,৫০০/- প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফ ট্রেডার্সকে সরেজমীন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বালুমহালটি রাজশাহী জেলার ১৪৩২ বঙ্গাব্দের বালুমহাল ইজারা দরপত্র বিজ্ঞপ্তির স্মারক নং- ৩১. ৪৩. ৮১০০. ০১৫. ০৭. ০৯১. ২৫. ৪০০ (৩৫) তারিখ-০২ মার্চ ২০২৫ খ্রিঃ, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দের ইজারায় চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটি সৃষ্টির পর হতে সর্বোচ্চ ইজারা ১৫,১৫,৭০,৫০০/- প্রদান করেন মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স। কিন্তু ইজারা প্রাপ্তির পর মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং-১৪৯৪/২৫ ও ৪৭৮৭/২৫ এর আদেশে ইজারার সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এবং বন্যায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ ৫ মাস ১৬ দিন বালুমহালটির বালু  উত্তোলন সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
এদিকে আওয়ামী দোসরদের থেকে মুক্ত হলো, চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহাল। বিগত ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা রজব, আনোয়ার, বেন্টু ও মুকুলসহ অনেকেই পরিকল্পিতভাবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এই বালুমহল ভোগ-দখল করে আসতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইজারা গ্রহিতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার শাহিনুর রহমান জানান, আমার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটির জন্য সরকারের নিকট ১৪৩২ বঙ্গাব্দে পুরা বছর ১২ মাস এর জন্য ইজারা মূল্য পরিশোধ করলেও  মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের মামলা ও বন্যায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ ৫ মাস ১৬ দিন বালুমহালটি হতে বালু উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়।
তিনি  আরো বলেন, সেই কারণে আমার প্রতিষ্ঠান বালুমহালটি হতে ১৪৩২ বঙ্গাব্দের ইজারা মূল্যের অর্ধেক টাকাও অর্জিত হবে না। উক্ত টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য বালুমহালটির ইজারা গ্রহিতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধরসহ ব্যবসায়িক অংশীদারগণ, জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষসহ সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহালটির পার্টনার রমজান আলী জানান, আমরা গত মার্চ মাসের ১৮ তারিখে সিডিউল ড্রপ করেছিলাম এবং আমরা প্রথম লোয়েস্ট হয়েছিলাম। ইজারা প্রাপ্তির পর মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং-১৪৯৪/২৫ ও ৪৭৮৭/২৫ এর আদেশে ইজারার সকল কার্যক্রম স্থগিত করে। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস পরে এসিল্যান্ট স্যার আমাদের বালুমহলটি বুঝিয়ে দেন। ৫ আগস্টের পরে মামলায় পলাতক আওয়ামী দোসরদের থেকে মুক্ত হয়েছে চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর বালুমহাল বলেও জানান তিনি।
রাজশাহীর পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান জানান, আমরা এই বালু মহলটি প্রতিবছরই ইজারাদারদের বুঝিয়ে দেয়। আমরা আশা করবো, সরকারী বিধি মোতাবেক উনি সঠিকভাবে বালু উত্তোলন করবেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের সাথে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রয়েছেন, কাটাখালি থানার অফিসার ইনচার্জ আছেন। শর্ত পূরণ সাপেক্ষে মেসার্স সাইফ ট্রেডার্স আগামী ১৪৩২-১৪৩৩ চৈত্র সাল পর্যন্ত চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটির বালু উত্তোলন করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
চরশ্যামপুর ও দিয়ারখিদিরপুর মৌজার বালুমহালটি বুঝিয়ে দেবার সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ লোকাল ও জাতীয় পর্যায়ের অনলাইন, প্রিন্ট এবং ইলেট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.