রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ওসির ইফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও হুন্ডি কারবারির বাড়িতে ইফতার করলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গোদাগাড়ী থানার নতুন ওসি জাহাঙ্গীর আলম রোববার পৌর এলাকার শ্রীমন্তপুর মহল্লার চিহ্নিত মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমের বাড়িতে ইফতার করেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, মহল্লার সানাউল্লার ছেলে আবদুল হাকিম কয়েক বছর আগে চরাঞ্চল থেকে এসে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার শ্রীমন্তপুর মহল্লায় একটি ভাঙা বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।
তবে কয়েক বছরের মধ্যে সে বাড়িটি ভেঙে একটি আলিশান বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতে গোদাগাড়ী থানা পুলিশের আনাগোনাও রয়েছে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন গোদাগাড়ী থানার বর্তমান ওসি জাহাঙ্গীর আলম। ওইসময় তিনি থানার এসআই ছিলেন। পদোন্নতি পেয়ে চলে যান অন্য থানায়।
এদিকে গত মাসে গোদাগাড়ী থানায় যোগদান করেই ওসি তার পুরনো লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দেন। সেই সুবাদে হুন্ডি ও মাদক ব্যবসায়ী হাকিমের বাড়িতে ইফতার করেন।
জানতে চাইলে ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি এসআই থাকার সময় আবদুল হাকিমের বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। রোববার সন্ধ্যার আগে ওই এলাকা দিয়ে হেঁটে আসার সময় তারা আমাকে বাড়িতে যেতে বলেন। আমিও দেখা করার জন্য ওই বাড়িতে যাই। তবে বাড়ির মালিকের নাম হাকিম কিনা সেটা তিনি স্মরণ করতে পারেননি। আর এই হাকিম মাদক ও হুন্ডি ব্যবসা করে কিনা সেটাও তিনি জানেন না।
এদিকে খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, হুন্ডি হাকিমের বাড়িতে বর্তমানে ভাড়া থাকেন গোদাগাড়ী থানার এসআই খালেক। এর আগে ভাড়া থাকতেন এসআই রাজিব। এসআই খালেক বলেন, আমি জানি না যে হাকিম একজন মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায়ী।
রোববার ওসি তার বাসায় ইফতার করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে এসআই খালেক বলেন, আমি থানাতেই ইফতার করেছি। তবে ওসি সাহেব ইফতারের সময়ে থানায় ছিলেন না।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মাদকবিরোধী অভিযানের সময় হুন্ডি হাকিমকে পুলিশ থানায় তুলে নিয়ে যায়। সে সময় প্রায় ৬ লাখ টাকায় রফাদফা হয় সাবেক ওসি হিপজুর আলমের সঙ্গে। পরে হাকিমকে মাদকের মামলায় চালান না দিয়ে পুলিশ ৩৪ ধারায় চালান করেন। ফলে আদালতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাকিম জামিন পেয়ে যান।
স্থানীয়রা আরও জানান, হাকিম পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন হুন্ডি ও মাদক কারবারি। মাদকের কারবার থেকে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন গত কয়েক বছরে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.