রাজশাহীর কাঁচাবাজারেও আগুন

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে শীতকালে সবজি চাষের উপযুক্ত সময়। উৎপন্ন হয় প্রায় সব ধরনের সবজি। আর রাজশাহী অঞ্চলে সবজির ফলনও হয় বাম্পার।

জেলার মোহনপুর, বাগমারা, পবা, দুর্গাপুর, পুঠিয়া, গোদাগাড়ী, তানোর উপজেলায় বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ হয়। ভরা মৌসুমে সতেজ সবজির সমাহার ঘটেছে। এই সময়ে সবজির দামও তুলনামূলক কম হয়।

কিন্তু না! পেঁয়াজের রোগ যেন সবজিতেও লেগেছে। উর্ধ্বমুখী রাজশাহীর কাঁচাবাজার। সবজির ভরা মৌসুম হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি সবজি।

আজ শনিবার সকালে রাজশাহী নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। সেই সঙ্গে পেঁয়াজের দামেরও খুব বেশী হেরফের হয়নি। প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ রকমভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আমদানীকৃত বিদেশী পেঁয়াজ ১০০-১৪০ টাকা ও পেঁয়াজের গাছসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা দরে।

কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৮৫ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, পটল ৩০-৪০ টাকা, পেপে ১৫-২০ টাকা, সিম ৩৫-৪৫ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, দেশী করলা ৮০-৯০ টাকা ও বড় করলা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, ঢেড়স ৫০ টাকা, আলু ২৫-৩০ টাকা, দেশী আলু ৪০-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও প্রায় সকল ধরনের শাক বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা কেজি দরে।

কাঁচাবাজারের এমন চড়া দামে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

আরিফুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বিটিসি নিউজকে বলেন, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে, তাতে না খেয়ে থাকতে পারলে ভাল হয়। দেশে উন্নতি হচ্ছে, উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ এসব বুলি শুনছি। কিন্তু কিভাবে উন্নতি করছে? কোথায় উন্নয়ন?  আমাদের মতো  সাধারণ মানুষের পকেটে তো টাকা থাকছে না। মৌলিক চাহিদা পূরণ করতেই হিমশিম খাচ্ছি। তাহলে উন্নতিটা হচ্ছে কার? ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই ক্রেতা।

অন্যদিকে, ভরা মৌসুমকালে সবজির দাম কি কারনে এমন চড়া তার সঠিক কারন বলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। তারা বেশী দামে কিনছেন, তাই বেশী দামে বিক্রি করছেন এমন বক্তব্য এসেছে বিক্রেতাদের কাছ থেকে।

এদিকে মসলায় দামও নিয়ন্ত্রণে ছিলনা। সাহেব বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, আদা প্রতি কেজি ১০০-১৪০ টাকা, রসুন ১৬০-১৮০ টাকা, মরিচ ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও রকমভেদে বাজারে প্রতি কেজি খোলা লবন ২০ টাকা, প্যাকেট লবন ৩০ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ৮৫-৯০ টাকা, বোতলজাত ৯৫ টাকা, সরিষা তেল খোলা ১২০ টাকা ও বোতলজাত ১৩০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে।

ডালের মধ্যে রকমভেদে প্রতিকেজি মসুর ৫০-১০০ টাকা, মুগ ১২০ টাকা, মটর ৮০ টাকা, এ্যাংকর ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

মাছের বাজারে ধরণ ও ওজনভেদে ইলিশ ৬০০-১০০০ টাকা, পাবদা ৪৮০-৮০০ টাকা, সিলভার ১২০-২০০ টাকা, কই ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, শোল ৪০০ টাকা, রুই ১৮০-৩৫০ টাকা, গ্রাস কার্প ২৫০ টাকা, মৃগেল ১৪০-১৬০ টাকা, কাতল ১৬০-৩২০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-৯০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০-১৫০ টাকা, ট্যাংরা ৫০০ টাকা, বড় শরপুটি ২০০ টাকা, সিং ৪৮০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, বাগাড় ৬০০-৯০০ টাকা, রুপচাঁদা ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

মাংসের মধ্যে গরু ৪২০-৪৪০ টাকা, খাসি ৭২০-৭৫০ টাকা, সোনালী মুরগি ২০০ টাকা, ব্রয়লার ১১৫ টাকা, লেয়ার ১৬০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, চালের দামও গত কয়েকদিনের তুলনায় কিছু চড়া যেতে দেখা গেছে। বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা ৩০-৩৫ টাকা, আটাশ ৩৫, ৩৭, ৪০ টাকা, মিনিকেট ৪৫, ৪৬, ৪৮ টাকা, কাটারীভোগ ৫৫, ৬০ টাকা, চিনিগুড়া ৯০, ৯৫ টাকা, আউশ চাল ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

আল্লাহর দান চাউল ঘর’র প্রোপাইটার নান্নু মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। পূর্বে যেসকল চালের বস্তা ২৭০০ টাকা দরে কিনতে পাওয়া যেত, সেগুলো এখন ৩০০০-৩১০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন ধান উঠতে শুরু করলে মোটা চালের দাম আর বাড়বে না জানান এই ব্যবসায়ী।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর স্টাফ রিপোর্টার আমানুল্লাহ আমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.