রাজশাহীতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তি পাচ্ছেন ১২৫ কারাবন্দি’ এখন মুক্তির অপেক্ষা তারা!

বিশেষ প্রতিনিধি: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এবারে মুক্তি পাচ্ছেন রাজশাহীর ১২৫ জন কারাবন্দি। এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন কারাবন্দীরা। সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাসে ‘সাজা মওকুফ’র মাধ্যমে ১২৩ জন ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাজা মওকুফের সুপারিশে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন আরও দুইজন কারাবন্দি।
কারাবন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।
সিনিয়র জেল সুপার জানান, মূলত দুইভাবে কারাবন্দিদের সাজা মওকুফের ভিত্তিতে মুক্তি মেলে। যেসব কারাবন্দি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছেন এবং স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও দুই ঈদ উপলক্ষে কারাবন্দীদের মুক্তি দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুযায়ী- কোনো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি তার সাজার মেয়াদের ২০ বছর কারাভোগ করলে তিনি মুক্তির আবেদন করতে পারবেন। এসব বন্দির বয়স, আচার-আচরণ, মামলার ধরণসহ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলে সরকার তাদের বিশেষ শর্তে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০ বছর সাজা খেটেছেন এমন কারাবন্দিদের মধ্যে যারা খুব অসুস্থ, অক্ষম বা বৃদ্ধ তারাই কেবল মুক্তি পান। এছাড়া কেউ কারাভোগের সময় ভালো আচরণ করলে তারাও বিশেষ সুপারিশে মুক্তি পেতে পারেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে মহানগর কমিটিতে জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে সাত কমিটির সদস্যের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত হয়। অপরদিকে, জেলার ক্ষেত্রে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি হয়ে থাকে।
কারাগার সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২০ সালে সারাদেশের কারাগারগুলো থেকে মোট ৩২৯ জন কারাবন্দি মুক্তি পেয়েছিলেন। গত বছর মোট সুপারিশ করা হয়েছিল দিবস উপলক্ষে ৩ জন ও বিশ বছরের অধিক ১৮ জনের। এরমধ্যে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে ছাড়া পেয়েছেন ৩ জন। এরআগে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ২৭ জন। তবে এবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে সাজাভোগ করছেন ১২৩ জনের বেশি বন্দি। এদের সকলের বয়সই প্রায় ৫০ থেকে ৮০ বছরের বেশি। এ বছর স্বাধীনতার মাস পর্যন্ত কারামুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে ১২৩ জনের। সেই সাথে লঘু অপরাধে মুক্তি পেতে পাচ্ছেন ০২ জন।
কারামুক্তির বিষয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে সব কয়েদির সাজার মেয়াদ ২০ বছর পূর্ণ হয়ে যায়, তাদের তথ্য তিনমাস আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। দেশের প্রতিটি কারাগারে একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। মন্ত্রণালয়ে ওই তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে চুড়ান্ত হয় তালিকা। মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা আসে সেসব কয়েদিকে মুক্তি দেয়া হয়।
সুবর্ণজয়ন্তীর মাসে কয়জন কারাবন্দি মুক্তি পাচ্ছেন জানতে চাইলে সিনিয়র জেল সুপার বলেন, লঘু দন্ডে দন্ডিত দুই আসামির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। একজন মে মাসে ও অপরজন জুলাই অথবা সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ২০ বছরের অধিক সাজাভোগকারী ১২৩ জনের সুপারিশ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেটি এখনো সময় সাপেক্ষ বিষয়। মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাইয়ের পরই জানা সম্ভব কতজন মুক্তি পাবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.