রাজশাহীতে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম এক লাফে বেড়েছে , দাম বৃদ্ধির ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে গ্রাহকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বেড়েছে সবধরনের এলপিজি গ্যাসের দাম। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি বেড়েছে ১৫০ টাকা। তবে বড় সিলিন্ডার গ্যাসের দাম এক লাফে বেড়েছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।

অন্য সিলিন্ডারের গ্যাসের দাম বেড়েছে পরিমাণ অনুযায়ী। তবে কী কারণে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তা খোদ ডিলার ও রিটেইলাররা জানেন না। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে গ্রাহকদের। তারা বলছেন, কোনো ধরনের নিয়ননীতি ছাড়াই এইভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি আমাদের নৈমিত্তিক জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির ফলে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গতকাল শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ডিলার ও রিটেইলারদের সাথে কথা বলা জানা যায়, ১ জানুয়ারি থেকে রাজশাহীতে এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায়। ডিলার ও রিটেইলাররা তা ২ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করেন।

ডিলার ও রিটেইলাররা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে পাইকারিতে দাঁড়িয়েছে ১০৫০ টাকা। খুচরা তা বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।

দোকানে ব্যবহৃত ৩৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ২৫০০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯০০ টাকা। খুচরা তা বিক্রি হচ্ছে ৩১০০ টাকায়। আর বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ছোট সাড়ে ৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকা। খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আর ৪৫ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম ৩১০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯০০ টাকা। বাজারে প্রায় ২০টির মতো কোম্পানী এলপিজি গ্যাস সরবরাহ করে।

নগরীর রেলগেটে ওমেরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স আনন্দ কুমার সাহার সত্ত্বাধিকারী আনন্দকুমার সাহা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম সিলিন্ডার প্রতি ১৫০ টাকা করে বেড়েছে। খুচরা বিক্রি হচ্ছে আর একটু বেশি। এছাড়া দোকানে ব্যবহৃত সব সিলিন্ডারের দামই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কী কারণে সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তা তিনি বলতে পারেন নি। প্রতি মাসে তার ৫ হাজার সিলিন্ডারের চাহিদা হয় বলে জানান তিনি।

যমুনা ও লাফসের বিক্রয় প্রতিনিধি রাকিব সরকার রিমন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ১ জানুয়ারি থেকে দাম বেড়েছে। ২ তারিখ থেকে আমরা তা কার্যকর করেছি।

তবে এই দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের সাথে রিটেইলরাও দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। নগরীর উপশহর নিউমার্কেট এলাকার এক ব্যাবসায়ী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আগে আমরা বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস ৯৮০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রয় করতাম। দাম বৃদ্ধির ফলে আমাদের কিনতেই হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকায়। বিক্রয় করতে হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। আবার এই গ্যাস বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসতে হয়। সেখানেও একটা খরচ আছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের লাভই থাকে না। প্রতিবার দাম বৃদ্ধির পর আমাদের এই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। গ্রাহকরাও বুঝতে চান না।

তবে এই দাম বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও মধ্য আয়ের মানুষ। তারা বলছেন, কোনোরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এইভাবে দাম বৃদ্ধি কখনো উচিত না।

নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা ইদরিস আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। আমার পরিবারে চারজন সদস্য। প্রতিমাসে একটা সিলিন্ডার প্রয়োজন হয়। সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির সাথে দেখা যাবে অন্য জিনিসের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইভাবে যদি প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পায় তাহলে আমাদের জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

মহিষবাথান এলাকায়  এক এনজিও কর্মী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। এখনো খোলা বাজারে পিঁয়াজের দাম কমেনি। সেখানে আবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। এই দাম বৃদ্ধির ফলে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.