রাজশাহীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। সোমবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় দিবসের কর্মসূচি। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বে-সরকারি ভবনসমুহে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা। এর আগে দিবসের প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ।

বিটিসি নিউজ ডট কম ডট বিডি

নগরীর ভুবনমোহন পার্ক শহীদ মিনারে রাত ১২টা এক মিনিটে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্যে দিয়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। এসময় তার সঙ্গে মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকুসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাসদ, ন্যাপ, বাসদ, সিপিবিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

 

সকালে নগরীর কোর্ট শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বেগম আখতার জাহান এমপি, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারও এখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদদের প্রতি।

 

কোর্ট শহীদ মিনারে বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান, জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহসহ জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা-কর্মচারিরা পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।

 

 

রাত ১২ : ০১ মিনিটে রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান  মহানগর বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলাযুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্তসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।


এদিকে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নগরীর লক্ষ্মীপুরে জেলা ও কুমারপাড়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সকাল ১০টায় মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে স্বাধীনতা চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাচ্চুসহ আ’লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিকালে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এবং আওয়ামী শিল্প গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া ছিল আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ। অন্যদিকে বিকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি বের করে মহানগর আওয়ামী লীগ। দিনটি উপলক্ষে শহরে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দিনব্যাপি মাইকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও দেশাত্ববোধক গান।

 

সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে তিনি প্যারেড পরিদর্শন, কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ, শারীরিক কসরত প্রত্যক্ষণ এবং পুরস্কার বিতরণ করেন। সকাল ৮টায় এখান থেকেই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

 

এদিন সকালে জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সেখানে প্রীতিভোজেরও আয়োজন করা হয়। জাতির শান্তি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে সকল মসজিদে ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয় । স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হাসপাতাল, কারাগার, শিশুসদন, শিশু-দিবাযতœ ও শিশুবিকাশ কেন্দ্রসমুহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

এদিকে রিভারভিউ কালেক্টরেট স্কুলে মহিলাদের ক্রীড়া ও আলোচনা অনুষ্ঠান এবং মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম মুক্তিযোদ্ধা একাদশ ও মেয়র একাদশ বনাম বিভাগীয় কমিশনার একাদশ এর মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় বিকেলে। সন্ধ্যায় শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য এবং উন্নয়ন অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

বিকেলে উপহার সিনেমা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রমাণ্য চলচ্চিত্র দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর, আলুপট্টি মোড় ও শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরেও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে এ দিন প্রবেশ মূল্য ছাড়া জাদুঘর, পার্ক ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। আলোকসজ্জা করা হয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.