রাজশাহীতে মামা-মামীকে হেরোইন দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফাসলেন ভাগ্নে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে মামা-মামীকে বিরিয়ানির প্যাকেটের ভেতর হেরোইন রেখে পুলিশে খবর দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই নিজের জালে ফাসলেন ভাগ্নে।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম কোর্ট স্টেশন এলাকায় ভাগ্নে মো. বাধন হোসেন সৌরভকে (১৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার বাধন লক্ষিপুর ভাটাপাড়ার আরিফুল ইসলাম ইমনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, হয়রানির স্বীকার মামা নগরীর হড়গ্রাম এলাকার বাসিন্দা মো. বাবু (৩১) ও তার স্ত্রী মোসা. লাইজু বেগম (২১)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাসুদ পারভেজ।
হয়রানির স্বীকার বাবু ও তার স্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি জানান, ‘বাবুর একটি স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রী থাকার পরও আড়াই মাস পূর্বে লাইজু বেগমকে সে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এতে বাবুর (মামা) উপর ক্ষিপ্ত হন অভিযুক্ত বাধন (ভাগ্নে)।
বাধন তার মামা বাবুকে বারবার দ্বিতীয় স্ত্রী লাইজুকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। ভাগ্নের কথা না শোনায় রাগান্বিত হয়ে বুধবার রাত ৮টার দিকে হড়গ্রাম কোর্ট স্টেশন এলাকায় দাড়িয়ে থাকা তার মামা ও ছোট মামীকে ফাঁসাতে তাদের হাতে একটি বিরিয়ানির প্যাকেট ধরিয়ে দেন। বিরিয়ানির প্যাকেটের মধ্যে ১০ গ্রাম হেরোইন রেখে বাধন কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দেন তাদের ধরার জন্য।
ওসি বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় ডিউটিরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম ও তার সঙ্গীয় ফোর্সকে বাধনের দেওয়া ঠিকানায় প্রেরণ করি। ঘটনাস্থলে বাধনের (ভাগ্নে) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাবু ও তার স্ত্রী লাইজুকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় বিরিয়ানির প্যাকেটটি লাইজু বেগমের হাতে ছিল। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তার ভাগ্নে (বাধন) কিছুক্ষণ আগে তাকে বিরিয়ানির প্যাকেটটি তাকে রাখার জন্য দিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর সে এসে নিয়ে যাবে বলেছে। কিন্তু সে না আসায় তারা রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছেন। প্যাকেটে থাকা হেরোইনের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তারা।
এরপর তাদের কথা মতো আরএমপির সিসিটিভি ফুটেজ ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় তথ্য প্রদানকারী কল রেকর্ড যাচাই করে ঘটনায় হয়রানির স্বীকার বাবু ও তার স্ত্রীর কথার সত্যতা মেলে। পরে তাদের ছেড়ে দিয়ে মূল আসামী বাধনকে (ভাগ্নে) গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তিনি।
ওসি আরও জানান, গ্রেফতারের পর বাধন তার দোষ স্বীকার করেছে। সে জানায়, বড় মামীর ওপর অন্যায় হওয়ায় ও মামা তার কোন খোজ-খবর না নেওয়ায় তাদের শাস্তি দেবার জন্য হেরোইন দিয়ে ফাসানোর পরিকল্পনা করেছিলো। বাধন নিজে একজন নিয়মিত মাদকের কারবারি সেটাও স্বিকার করে। পরিকল্পনায় ব্যবহৃত মাদক তার নিজের কাছে রক্ষিত ছিল।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বিটিসি নিউজকে বলেন, গ্রেফতার বাধনের বিরুদ্ধে পূর্বে মাদকদ্রব্য, নারী-শিশু নির্যাতন ও সামাজিক শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে তিনটি পৃথক পৃথক মামলা রয়েছে বলে পিসিপিআর রেকর্ডে জানা গেছে। এছাড়াও বর্তমানে সে নিজ হেফাজতে মাদকদ্রব্য রাখা ও পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলায় অন্যকে ফাঁসানোর চেষ্টার দায়ে তার বিরুদ্ধে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় পুলিশবাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে আদালতের সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.