রাজশাহীতে মাদকের কারবার কমছে না কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মাদক এখানে সহজলভ্য ।কিন্ত মাদক বিরোধী অভিযান শুরুর পর মহানগরীতে মাদকের সেই রমরমা ভাব নেই। তারা কৌশল বদলিয়ে হোম সেলে চলে গেছেন। কিন্ত মহানগরীর বাইরে গোদাগাড়ী তানোর,পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট, বাঘা থানা গুলোতে মাদক খুবই সহজলভ্য।
তাই প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মোটর সাইকেল ছুটে চলে এইসব থানাগুলোতে।যা পুলিশের অজানা নয়।
রাজশাহীতে মাদকের ছড়াছড়ি মোটেই নতুন নয়। প্রায়ই ঘটা করে মাদক বিরোধী অভিযানের খবর প্রচার হয়। এতে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ধরাও পড়ে। উদ্ধার হয় হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা। মাঝে মধ্যে যারা গ্রেপ্তার হয় তারা মূলত বাহক বা সেবনকারী। মাদক ব্যবসায়ী বা গডফাদাররা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফলে মাদকের কারবার চলতেই থাকে।
হেরোইন চোরাচালানে নাম করেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এ অঞ্চল দিয়ে সবচেয়ে বেশি আসে হেরোইন। এখানকার কয়েকশ মাদক ব্যবসায়ী রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। এলাকায় প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করে কেউ কেউ জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানে বড় বড় মাদক চালানের সাথে মাঝে মধ্যে ধরা পড়েন মূলত টাকার বিনিময়ে মাদক বহনকারীরা। বেশিরভাগ সময় তারাও সটকে পড়েন।
সম্প্রতি রাজশাহীতে ‘মাদক অপরাধ দমনে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তাদের কথায় এসব ছাড়াও সীমান্তের অরক্ষিত অবস্থা নিয়েও কথা হয়েছে। কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা মাদকের চালান ধরা পড়ে সে প্রশ্নও উঠেছে সভায়।
বেশিরভাগ সময়ে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী-বিজিবির অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধার হলেও পালিয়ে যায় পাচারকারীরা।
অন্যদিকে ওপরের নির্দেশ সত্ত্বেও স্থানীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক মাদক ব্যবসায়ীদের হালনাগাদ ডাটাবেজ তৈরি সমাপ্ত হয়নি। ফলে মাদকের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক তৎপরতা, গোয়েন্দা নজরদারি, অভিযান সত্ত্বেও মাদক ব্যবসা আশানুরূপ কমেনি। মাদকের ছড়াছড়িতে সমাজ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে, তরুণরা অন্ধকার জীবনে জড়িয়ে পড়ছে।
এ অবস্থায় শর্ষের ভেতর ভূতের কথা মনে হলে কি দোষ দেয়া যাবে ? চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী গডফাদারের গায়ে টোকা না দিয়ে যতই অভিযান চলুক, মাদক উদ্ধার ও বাহকদের গ্রেপ্তার করা হোক এতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না, কে অস্বীকার করবে ? সেই সাথে সীমান্তে কাঁটাতার ও সার্বক্ষণিক নজরদারি ফাঁকি দিয়ে মাদকের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। কিভাবে তা কি বলার অপেক্ষা রাখে ?
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো: মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.