রাজশাহীতে মওসুমের সর্বন্মিন তাপমত্রা ৭.৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে রাজশাহী। একদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, আরেক দিকে হিমালয় ছুঁয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাস। দুইয়ে মিলে অসহনীয় করে তুলেছে রাজশাহীর মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শনিবার সকাল ৯টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন এটি দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর রাজশাহীর চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ বছর আর এর নিচে তাপমাত্রা নামেনি এ শহরে।
শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।রাজশাহীতে এখন প্রতিদিন ভোরের সূর্যের দেখা মিলছে দুপুরের পর। আবার দুপুরের পর সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলতেই পড়ছে ঘন কুয়াশা। সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। এ পুরো সময়টা ঘন কুয়াশার চাদরে ঘেরা থাকছে রাজশাহী।
কুয়াশাচ্ছন্ন সাদা ধোঁয়াটে হিম পরিবেশের মধ্য দিয়েই করতে হচ্ছে সব ধরনের দৈনন্দিন কাজকর্ম। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত হাইওয়ে সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়েই চলাচল করছে ভারী যানবাহন। আর ঘন কুয়াশার কারণে ফগলাইট ব্যবহার করতে হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকদেরও।টানা শীতের কারণে কাজ না পেয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিনমজুররা।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বস্তি, রেলওয়ে স্টেশন ও ফুটপাতে বসবাস করা ছিন্নমূলদের। কষ্টে দিনরাত কাটছে তাদের।কেউ শীতবস্ত্র আবার কেউ খাবারের কষ্ট নিয়েই জীবনযাপন করছেন। নিম্ন আয়ের মানুষেরা সামর্থ্য অনুযায়ী ফুটপাতে বসা পুরোনো শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে গিয়ে রোজ ভিড় জমাচ্ছেন। টানা শীতের কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছেন।
আগামী ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে শীত কমার সুখবর নেই আবহাওয়া কর্মকর্তাদের কাছে।রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের মতে, এবার দেরি করে শীত নামলেও জানুয়ারির শুরু থেকেই রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই থাকছে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকছে ১৯ থেকে ২১ ডিগ্রির ঘরে।
অর্থাৎনরাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের অব্যাহত রয়েছে।সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এ ছাড়া ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) উত্তরের এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, সর্বশেষ এক সপ্তাহের আবহাওয়ার পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যায়- গত রোববার (২১ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও শুক্রবার ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) রহিদুল ইসলাম জানান, এবার একটু দেরি করেই নেমেছে শীত। জানুয়ারি মাসেই কেবল তাপমাত্রা কমেছে। এখন পর্যন্ত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে শীতের দাপট। এবার তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। খুব সম্ভবত মাঘের শেষেই প্রকৃতি থেকে বিদায় নেবে শীত। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এভাবেই কাটবে চলতি শীত মৌসুম।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.