নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে নিজ বাসায় হত্যার শিকার বিচারকের ছেলের গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া তাঁর এক পায়ের আঙুলে কাটা রয়েছে। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার পর রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় তাঁর ছেলে তাওসিফ রহমান (সুমন) হত্যার শিকার হয়। সে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারও (৪৪) আহত হন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। আহত হওয়ায় তাঁকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত লিমন মিয়া (৩৫) গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজিউর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, বিচারকের ছেলেকে সম্ভবত শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্ন রয়েছে। তার হাঁটুর নিচে পায়ের আঙুলে কাটা রয়েছে।
তিনি বলেন, লিমন একটি ব্যাগ নিয়ে বাসায় ঢোকেন। ডাইনিং টেবিলে বসে তিনি অনেকক্ষণ ধরে তাসমিন নাহারের সঙ্গে গল্প করছিলেন। একপর্যায়ে লিমন উত্তেজিত হয়ে তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করলে তাসমিন নাহার দৌড় দিয়ে একটি কক্ষে ঢুকে সিটকিনি লাগিয়ে দেন। লিমন ১০–১৫টি লাথি দিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাসমিন নাহারের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। বিচারকের ছেলে পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। সে শব্দ শুনে উঠে এলে বাসার কাজের মেয়ে তাকে বিষয়টি বলেন। ছেলে ওই ঘরে গিয়ে ওই অবস্থা দেখে লিমনকে আটকানোর চেষ্টা করে। তারপরে তাকে ওড়না জাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর মধ্যে কাজের মেয়ে দৌড়ে বাইরে এসে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনকে খবর দেন।
উপপুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান আরও বলেন, হামলাকারী লিমনের হাতে, মাথায় ও পায়ে জখম রয়েছে। আর তাসমিন নাহারের পেটে এবং ঊরুতে আঘাত রয়েছে।
ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী বলেন, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মুঠোফোন নম্বর লিখে নেন। বেলা আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাঁকে এসে জানান, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেকে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তাঁরা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বিটিসি নিউজকে বলেন, বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। রাত নয়টার দিকে জানা যায়, হামলাকারীর জ্ঞান ফিরেছে। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি জি, এম হাসান-ই-সালাম (বাবুল) রাজশাহী। #

















