রাজশাহীতে পুলিশের সিনিয়র অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণাকারী চক্রের ০৩ সদস্য গ্রেফতার সহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

রাজশাহী জেলা পুলিশ: বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের কাছে ফোন দিয়ে নিজেকে কখনো ডিআইজি, কখনো এসপি, কখনো এএসপি, কখনো থানার অফিসার ইনচার্জ অর্থাৎ পুলিশের সিনিয়র অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে এমন একটি প্রতারক চক্রের ০৩ জন সক্রিয় সদস্য ১। মোঃ জাকারিয়া (৩৫), পিতা-মৃত ইদ্রীস আলী, সাং-কেশবপুর, থানা-মান্দা, জেলা-নওগাঁ, ২। মোঃ সাগর (২২), পিতা-মৃত হাসান আলী, সাং-বাংড়া, থানা-মান্দা, জেলা-নওগাঁ ও ৩। সুমন পন্ডিত (৪০), পিতা-সুনীল পন্ডিত, সাং-সাবাই, থানা-মান্দা, জেলা-নওগাঁগণকে গ্রেফতার করে রাজশাহী জেলা পুলিশের ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) টিম।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (১৩ আগস্ট) প্রতারক চক্রের একজন সদস্য জেলা পুলিশ রাজশাহীর কট্রোলরুমের ল্যান্ড ফোনে ০১৭৩৮-৭৪৩৩৩০ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে মোহনপুর থানার ডিউটি অফিসারকে উক্ত নম্বরে ফোন দিতে বলে। তখন জেলা পুলিশ কট্রোলরুম মোহনপুর থানার ডিউটি অফিসারকে উক্ত নম্বরে ফোন দিয়ে কথা বলার জন্য বলে। এরপর মোহনপুর থানার ডিউটি অফিসার ০১৭৩৮-৭৪৩৩৩০ নম্বরে ফোন দিলে প্রতারক চক্রটি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে মোহনপুর থানার পার্শ্বে কোন বিকাশের দোকান আছে কি-না জানতে চায় এবং বিশেষ প্রয়োজনে ০১৭০৬-৩৮৩৩৩২ নম্বরে দ্রুত ১০,০০০/-টাকা বিকাশে পাঠাতে বলেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয়ে দিয়ে বিকাশ যোগে টাকা পাঠানোর বিষয়টি ডিউটি অফিসারের নিকট সন্দেহ হলে তিনি মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে বিষয়টি জানান।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনার বিষয়টি বিস্তারিতভাবে রাজশাহীর পুলিশ সুপার জনাব এ বি এম মাসুদ হোসেন, বিপিএম (বার) স্যারকে জানালে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ০১৭০৬-৩৮৩৩৩২ নম্বরে বিকাশে টাকা পাঠাতে নিষেধ করেন ও জেলা গোয়েন্দা শাখাকে প্রতারক চক্রের বিষয়টি উদঘাটন করে প্রতারকদের আইনের আওতায় আনার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির ইন্সপেক্টর আতিকুর রেজার নেতৃত্বে একটি টিম নওগাঁ জেলার মান্দা থানাধীন সাবাই হাট এলাকা থেকে ১৩/০৮/২০২১ তারিখ বিকাল অনুমান ০৫.৩০ টায় আসামী ১। মোঃ জাকারিয়া (৩৫), ২। মোঃ সাগর (২২), ৩। সুমন পন্ডিত (৪০) দেরকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতদের দেহ তল্লাশি করে একটি পুরাতন নোকিয়া মোবাইল ফোন, একটি পুরাতন ম্যাক্সটেল মোবাইল ফোন ও একটি জাল ভোটার আইডি কার্ড পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে প্রাপ্ত টাকা বিকাশের দোকান হতে উত্তোলনের সময় জাল ভোটার আইডি কার্ডটি ব্যবহার করে। বিভিন্ন সময় তারা নিজেদের পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে। প্রতারণার এই কাজে তাদের সাথে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে।
এছাড়া নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করাকালে গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া স্বীকার করে যে, তার নিকট একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র লুকায়িত অবস্থায় রাখা আছে। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রটি কোথায় কিভাবে লুকায়িত অবস্থায় রেখেছে তা জানার পর রাজশাহীর পুলিশ স্যারের দিকনির্দেশনায় রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জনাব সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ডিবির ইন্সপেক্টর জনাব আতিকুর রেজাসহ সঙ্গীয় গোয়েন্দা শাখার একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১৪-৮-২০২১ তারিখ রাত অনুমান ০৩.১৫ টার দিকে রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানাধীন টাংগন গ্রামস্থ একটি গলির মধ্যে বালির বস্তা ও বিছানো ইটের নিচ হতে মোঃ জাকারিয়া নিজ হাতে সাদা স্বচ্ছ পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র (বিদেশি পিস্তল), একটি ম্যাগাজিন ও চার রাউন্ড গুলি বের করে দেয়।
ঘটনা সংক্রান্তে মোহনপুর থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় পৃথক পৃথক ০২টি মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে সচেষ্ট রয়েছে রাজশাহী জেলা পুলিশ।
সংবাদ প্রেরক রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতেখায়ের আলম এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.