রাজশাহীতে নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবীতে আইডিইবির উদ্যোগে মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি: ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সে ভর্তির নীতিমালা ২০২০ প্রত্যাহার ও চলতি শিক্ষাবর্ষে ২০১৯ এর ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছেন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। আজ বৃহস্পতিবার (৩০শে জুলাই) বিকালের দিকে রাজশাহী মহানগীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই মানববন্ধন করেন তারা।

ইতোমধ্যে দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো, রকমের বয়সের সীমাবদ্ধতা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়ন বাস্তবায়নে এই নীতিমালা মেধাহীন শিখন হবে বলে আশঙ্কা করছেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ, রাজশাহী।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২০ এর জারিকৃত নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট এবং সার্টিফিকেটের গুরুত্ব কমবে।তাই ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার জন্য আত্মঘাতি এই নতুন ভর্তি নীতিমালা-২০২০ বাতিলের দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)। এই আত্মঘাতি নীতিমালা থেকে ফিরে আসার আহবান জানান তারা।

বক্তারা বলেন, সেখানে বিশ্বমানের রাষ্ট্র বিনির্মাণে মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রয়োজন। সেখানে একরকম দেশকে ও ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকে ধ্বংস করতে এই মেধাহীন নীতিমালা বাস্তবায়নের পায়তারা চলছে। তারা ২০২০ এর জারিকৃত নীতিমালা বাতিল করে অনুমোদিত ২০১৯ সালের নীতিমালা বাস্তবায়নের আহবান জানান।

তারা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির নীতিমালায় বয়স অবারিত করা এবং গত বছরের ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ এর পরিবর্তে হ্রাস করে ২.৫০ করা হয়েছে।

এমন আত্মঘাতি ও হটকারী সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষিতে দেশের কারিগরি শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়াবে। দেশের শিক্ষাবিদ ও সরকার কর্তৃক কোনো স্টাডি ছাড়াই ঘোষিত হটকারী নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই নীতিমালা বাতিল করার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ২০১৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী দেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২০২০ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ছাত্র ভর্তি করার জন্য এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা আরো বলেন, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সমূহে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারির প্রায় ৬০ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে।এছাড়া রয়েছে শেণিকক্ষ, ল্যাব, ওয়ার্কসপের মারাত্মক সংকট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও শিক্ষক-কমচারির পদ সৃষ্টি ও নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে এমনিতেই মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ের অধিকতর মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

মানববন্ধনে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ এর মহাসংকট নিরসনে করে জীবন-জীবিকা রক্ষায় যখন দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে কি কারণে এবং কাদের স্বার্থে এ অযোক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষা ও প্রকৌশল কর্মব্যবস্থায় বিশৃঙ্খল পথ বেছে নেয়া উচিৎ হয়নি বলে মনে করেন নেতৃবৃন্দ।

প্রতিটি সিদ্ধান্ত ভারসাম্য বজায় রেখে হয়ে থাকে। এখানে নীতিমালাটি জনগুরুত্ব এবং মেধা ও কাজের মানের দিক বিবেচনা করা হয়নি। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে কাজের মান থাকবে না। এছাড়াও মেধাহীন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এতে অন্যান্য মানবিক কাজে এসব বেকারের অংশগ্রহণ ব্যাহত হবে।

শিক্ষা ও কাজের খাপখাওয়ানো কঠিন হবে। ফলে ভবিষ্যতে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে এবং শিথিলতা বিরাজ করবে। অর্থাৎ কাজের মানের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এমনটি নয়। পুরো দেশের উন্নয়নই বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি এই সেক্টরটি অনেকটা মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। যার বিরুপ প্রভাব পড়বে সুদুরপ্রসারি।

আইডিইবি’র রাজশাহী শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আমিনুল হকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আইডিইবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি কবির উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক আব্দুন নোমান, আইডিইবি’র রাজশাহী শাখার সহসভাপতি মেরাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. হোসেন শাহীদ সোহরাওয়ার্দী, আইডিইবি’র রাজশাহী শাখার অর্থ সম্পাদক প্রকৌশলী আবু বাশির, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অহিদুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতিনিধি সুমন হায়দার,বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক শাখার শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কামাল হোসেন, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন সমন্বয় পরিষদ এর মোঃ জাহাঙ্গীর সার্ভে ইন্সটিটিউট রাজশাহীর অধ্যক্ষ, প্রাইভেট সেক্টর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরাম রাজশাহী শাখার সভাপতি।

উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক শাখার শিক্ষকবৃন্দ, জাতীয় বিজ্ঞান গবেষণা প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, রাজশাহী বাকাছাপ এর নেত্রীবৃন্দ, বিভিন্ন পলিটেকনিক ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.