রাজশাহীতে দলের সদস্য সচিবকে বাদ দিয়ে বিএনপির কর্মসূচী, গন্ডগোলের মাধ্যমে সমাপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সোমবার (৩০ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
রাত ৮টার পর এই ঘটনা ঘটলে সভাটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষে কার্যালয়ের প্রধান ফটকসহ চেয়ার টেবিল ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করা হয়।
বিএনপির দলীয় কর্মসূচী হলেও এর মূল আয়োজক ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা। সন্ধার পর কর্মসূচীতে সকল নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল। তবে শুধু উপস্থিত ছিলেন না, নগর কমিটির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ। বিষয়টি পরে জানতে পেরে তিনি বিএনপি কার্যালয়ে এসে কর্মসূচীতে যোগ দেন। কর্মসূচীতে তার যোগদানের পর আপত্তি তোলেন নজরুল হুদা। সদস্য সচিব মামুন থাকলে তিনি ওই কর্মসূচীতে থাকবেন না বলেও জানান সকলকে।
কর্মীদের অভিযোগ, সন্ধার পর আলোচনা সভায় ও দোয়া মাহফিলের সময় নির্ধারণ করে অন্যন্য নেতাকর্মীদের জানানো হলেও জানানো হয়নি সদস্য সচিব মামুনসহ তার সমর্থকদের।
শহীদ রায়হান পিন্টু, রাসেল আহম্মেদ রয়েল, বজরুজ্জামান মোহন সহ একাধিক প্রতক্ষদর্শী নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যার পর নগরীর মালোপাড়ায় বিএনপি কার্যালয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে একটি আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অপরদিকে সদস্য সচিব মামুনের অভিযোগ, তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে কর্মসূচীর কথা জানানো হয়নি।
এদিকে সদস্য সচিব বাদেই কেন এ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে তা জানতে চান মামুনের নেতাকর্মীরা। এমন প্রশ্ন ও তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হলে নজরুল হুদা ও ওয়ালিউল হক রানা সমর্থকদের সাথে মামুনের সমর্থকদের কথা কাটাকাটির শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে। এতে পুরো কর্মসূচীই ভেস্তে যায়।
এতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও মারামারি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
এবিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ বলেন, দলীয় একটি কর্মসূচী হচ্ছে অথচ, আমিই জানি না। তারপরও জানার পরপরই দলীয় কার্যালয়ে আমি উপস্থিত হয়েছি। কিন্তু আমার উপস্থিতি কোনো ভাবেই মেনে নিচ্ছেন না নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা। কেন মানছেন না, সেটা তিনিই ভালো জানেন। তবে এমন ঘটনাটি দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না বলেও জানান মহানগর বিএনপির এ নেতা।
সংঘর্ষের ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা জানান, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ তিনি আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে বিরোধী দলের রাজনীতি করেন। সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ তিনি ভিন্নধারার রাজনীতির সাথে জড়িত। আরও বিভিন্ন কারণে তাকে এ কর্মসূচি ডাকা হয় নাই। তিনি কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর আমি জানিয়েছি সদস্য সচিব থাকলে আমি থাকবো না। এ কথা বলাতেই তার সমর্থকরা আমার ওপর চড়াও হয়। এছাড়া সেখানে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান নজরুল হুদা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা বলেন, কোনো মিটিং বা কার্যক্রম আমার আহ্বানে সদস্য সচিবের মাধ্যমেই পরিচালিত বা অনুষ্ঠিত হবে। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের উপস্থিতি ছাড়া কোনো দলীয় কর্মসূচি হয় না। তারপরও ওই প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে আমার দেরি হয়েছিল। সেখানে গিয়ে যখন দেখলাম তাদের মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়েছে তখন কর্মসূচি বাতিল করার নির্দেশ দিয়ে সবাইকে চলে যেতে বলি। এ নিয়ে আর তেমন কিছু হয়নি বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টিতে আমার কোনো মন্তব্য নেই। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা হয়নি।
সংবাদ প্রেরক ইফতেখার আলম, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.