রাজশাহীতে চালের বাজার অস্থির, একের দায় অন্যের উপর

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত কয়েক মাস ধরেই রাজশাহীতে চালের বাজার উর্দ্বমুখী। নিয়ন্ত্রণে নেই নিত্যপ্রয়োজনীয়ও এই দ্রব্যটির দাম। পাইকারি এবং খুচরা বাজারে বেড়েই চলেছে চালের দাম। এতে নিম্নবিত্ত মানুষরা হিমমিশ খাচ্ছেন চাল কিনতে। বেসামাল চালের বাজার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।
সকল ধরনের ব্যাবসায়ীর় কাছে থাকে তিনটি হাত লেফট রাইট এবং অজুহাত। বাংলাদেশের চাল ব্যবসায়ীর তিনটি হাত তার একটি অজুহাত।একটা না একটা অজুহাত থাকবে।সকল ধরনের সিন্ডিকেট মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতটা প্রায় একই রকম প্রায় এক রকম।
তবে চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ওপেন এলসির সুযোগ না থাকার কারণে বাড়ছে দাম। এটিই চালের বাজার অস্থিতিশীল থাকার মূল কারণ। ওপেন এলসির সুযোগ না হলে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী বৈশাখ-জ্যেষ্ঠে নতুন ধান উঠলে নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে চালের দাম।
রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে পাইকারি এবং খুচরা চালের আড়তগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। পাইকারী বাজারে কোন কোন চালের দাম বস্তপ্রতি ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তেমনি খুচরা বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম।
আঠাশ চালের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪ টাকা। তবে পাইকারি বাজারে ৫০ কেজি বস্তার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা। এটির মূল্য আগে ছিলো ২ হাজার ৫০০ টাকা। মিনিকেটের দাম ২ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৮ টাকা। পাইকারি বাজারে এর দাম ৩ হাজার টাকা। এর অগে দাম ছিলো ২ হাজার ৮০০ টাকা।
পাইকারি বাজারে জিরাশালের দাম ৩০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮০০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ২ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৫৮ টাকা। বাসমতি চালের দাম বস্তপ্রতি ৬০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা। এতে খুচরা বাজরেও দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩ টাকা করে। বাসমতি এখন ৬৫ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
বাড়তি দাম নাজিরশাল আর স্বর্ণারও। নাজিরশালের দাম ২ হাজার ৬০০ টাকা থাকলেও এখন ৪০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার টাকা। স্বর্ণা দাম ২০০ টাকা করে বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ২০০ টাকা। খুচরা বাজারে নাজিরশালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে দাম হয়েছে ৬৫ টাকা।
নগরীর সাহেববাজারে চাল কিনতে এসেছিলেন এক রানী। তিনি বলেন, আমি একটি মেসে রান্নার কাজ করি। আমরা দিন আনি দিন খাই। চালের দাম এখন বাড়তি। দুই টাকা দাম বাড়লেও এটাও আমার কাছে বেশি। দাম কমলেই আমার মত সব গরীব মানুষদের জন্য সুবিধা হয়।
বাড়তি এই চালের দাম নিয়ে কথা বলেছেন চাল ব্যবসায়ী মেসার্স মক্কা রাইস এজেন্সীর মালিক আব্দুল কাদের ভুলন। তিনি বলেন, আমি জানি সারাদেশে মাত্র ৩২০ জন আমদানিকারককে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই বড় বড় ব্যবসায়ী। সাধারণ ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এখন যারা ভারত থেকে চাল আনছেন তারা নিজেরাই মজুদ করছে। তাদের এই সিন্ডিকেটের জন্য ভারত থেকে চাল আমদানি করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ওপেন এলসির সুযোগ সরকার না দিলে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে এত সহজে আসবে না। এখন প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে চালের দাম বাড়তে পারে। তবে নতুন চাল কয়েক মাস পরে বাজারে আসলে দাম কমতে পারে।
রাজশাহী পাইকারী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা এলসি খোলার সুযোগ পাইনি। হাতে গোনা কিছু লোক এলসি খোলার সুযোগ পেয়েছেন। যারা পেয়েছেন তারা চাল কিনে কখন কি করছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। ওপেন এলসির সুযোগ নেই বলেই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.