রাজশাহীতে কুমারী পূজায় নারীদের সমর্মযাদা প্রত্যাশা


নিজস্ব প্রকিবেদক: শারোদিয়ার আজ মহাষ্টমী। শারদীয় দুর্গাপূজার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং জাঁকজমকপূর্ণ দিন আজ। দেবীর সন্ধিপূজা এবং কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। দুর্গোৎসবের এই দিনে রাজশাহী মহানগরীতে পালিত হয়েছে কুমারী পূজা। সকাল থেকেই ভক্ত ও পূজারিদের উপস্থিতিতে ভিড় দেখা যায় পূজা মন্ডপগুলোতে ।
সোমবার (৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মহানগরীর ত্রিনয়নী মন্দিরে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
কুমারী পূজায় অংশ নিতে মহানগরীর কুমারী কন্যাদের ঢল নামে মন্দিরে। সকাল থেকেই কুমারীরা পূজা-অর্চনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
এ বছর কুমারী পূজায় দেবীর আসনে বসানো হয়েছে নগরীর সাগরপাড়া এলাকার মা ছন্দা সরকার ও বাবা স্বাগত দাসের আট বছরের কন্যা ইন্দুপ্রভা দাস তিতলিকে। পূজা শুরুর আগে তাকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে নানা অলঙ্কার ও ফুলের মালা দিয়ে নিপুণভাবে সাজিয়ে দেবীর আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়। এর আগে মন্ত্রোচ্চারণ, ফুল ও বেলপাতার আশীর্বাদ পৌঁছে দেয়া হয় ভক্তদের কাছে। এরপর পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ভক্তদের উলুধ্বনি আর ধর্মপ্রাণ মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধায় সম্পন্ন হয় কুমারী পূজা।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, কুমারী পূজার উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে। বর্ণিত রয়েছে, কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। সে সব দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়।
তিনি যেমন দুষ্টের দমন করেন, তেমনি মাতৃরূপে ভক্তের পালনও করেন। সেই ধারণাকে ধারণ করে কুমারী পূজার আবির্ভাব। কুমারী পূজায় সাত থেকে নয় বছরের কুমারীকে দেবী হিসেবে কল্পনা করে পূজা করা হয়। বয়সভেদে দেওয়া হয় ভিন্ন ভিন্ন নাম। ভক্তরা তার মাঝে খুঁজে পান দেবীরূপী মাকে। পূজা শেষে সবার মঙ্গল কামনা এবং পাপমুক্তির জন্য ভক্তরা দেবীর পায়ে শ্রদ্ধা জানান ফুল ও বেলপাতা নিবেদন করে।
কুমারী পূজার মাধ্যমে নারী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে আযোজন করা হয় সন্ধিপূজারও। সন্ধিপূজা হলো মা দুর্গার কাছে অসুর বাহিনীর আত্মসমর্পণ।
ভক্তরা বলেন কুমারী পূজার মাধ্যমে সমাজে নারীদের সমর্মযাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশে শান্তিই একমাত্র প্র্রার্থনা তাদের।
উল্লেখ্য, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার বেলুড় মাঠে ৯ কুমারীকে পূজা করেন তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে মহা ধুমধামে কুমারী পূজা প্রথা চলে আসছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.