রাজশাহীতে করোনা ডেডিকেটেড’ সদর হাসপাতাল নানা জটিলতা ও সমন্বয়হীনতায় এখুনো শেষ হয়নি সংস্কার কাজ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে করোনার উর্ধ্বমুখি পরিস্থিতিতে সদর হাসপাতালকে ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যা ও ১৫ আইসিইউ সংবলিত হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুতে সংস্কার কাজে গত ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতা ও সমন্বয়হীনতায় সংস্কার কাজই এখনো পুরোপুরো শেষ হয় নি।
এরমধ্যে সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে? না কী সদর হাসপাতাল আগের কার্যক্রম চালু করবে? না কি ডেন্টাল ইউনিট হিসেবে ব্যবহার হবে? এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে টানাপোড়ন চলছে।
তবে উত্তর যাহোক, সদর হাসপাতাল করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুত না হওয়ার অজুহাতে স্বাভাবিক হচ্ছে না রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম। সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগ পোহাচ্ছে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের রোগীরা।
৪ জুলাই রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুতিতে প্রশাসনিক অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। পরবর্তীতে রাজশাহী সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে সংস্কার কাজ শুরু করে পিডিবি ও একটি বেসরকারি কোম্পানী। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের এক মাসের অধিক পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয় নি। এছাড়া নির্ধারিত ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে কী না ? এ বিষয়েও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সদর হাসপাতাল সংস্কার কাজে দায়িত্বরত ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, এখানে দুইটা টেন্ডার ছিলো। একটা সিভিল অংশে এবং আরেকটা মেডিকেলের গ্যাস অংশের। সিভিল অংশের কাজ শেষ হয়ে গেছে। সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে গ্যাসের অংশটার জন্য। গ্যাসের কাজ শেষ হলেই ওই কাজটা শেষ হয়ে যাবে। আমাদের যে কয়টা বেড হবে সেখানে লাইন টানা শেষ হয়েছে। এখন গ্যাসের কাজ শেষ হলেই জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বুঝিয়ে দিতে পারবো। গ্যাসপ্ল্যান্ট নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছিলো। যার কারণে দেরি হয়েছে। গ্যাসের কাজটা একটা বেসরকারি কোম্পানী করছে। তাদের ৬৪ জেলাতেই কাজ হচ্ছে। সময়মতো গ্যাসপ্ল্যান্টের রুমটা না পাওয়ার কারণে তারা সেট-অ্যাপটা অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলো। একারণেই দেরি হচ্ছে।
এদিকে, সংস্কার কাজ শেষ হলে ও প্রয়োজনীয় উপকরণ পেলে সদর হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
রামেক হাসপাতালের করোনা রোগীর ব্যবস্থাপনার যে সক্ষমতা আছে তার বেশি রোগী হলে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হবে-এমনটাই বলছেন রাজশাহী বিভাগীয় (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার ও রাজশাহী ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রাজিউল হক।
তবে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিটিসি নিউজকে জানান, হাসপাতালে করোনার রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গিয়ে অন্যান্য সাধারণ রোগীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখনো পোহাচ্ছে। বার্ন ইউনিটে করোনা রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এতে দুইবছরের অধিক সময় ধরে মাত্র ১৪টা বেড নিয়ে বার্ন ইউনিটকে দ্বিগুনেরও বেশি রোগীর চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এখানকার রোগীরা বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন। অন্যান্য ক্ষেত্রেও দুর্ভোগ রয়েছে।
সদর হাসপাতাল ডেডিকেটেড হাসপাতার হিসেবে প্রস্তুত হলেই সেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়া হবে। এখন রোগী সংখ্যা কম। সবাইকে সেখানেই পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা হাসপাতাল থেকে দেয়া হবে। তবে সেখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগী বেড়ে গেলে চিকিৎসা দেয়া হবে রামেক হাসপাতালে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.