রাজধানীতে ডিবি’র অভিযানে বিদেশী রিভলভার-গুলি ও লুন্ঠিত অর্থসহ’ ডাকাত দলের ৩ সদস্য গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজধানীর মৌচাক ফ্লাইওভার ও নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় অস্ত্রসহ আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা রমনা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো- জলিল মোল্লা, রিয়াজ ও দীপু।
গতকাল বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ২০২১ ইং ধারাবাহিক অভিযানে ঢাকা মহানগরী, সাভার ও যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা রমনা জোনাল টিম। এ সময় তাদের হেফাজত হতে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত ০২ টি বিদেশী রিভলবার, ৫০ রাউন্ড গুলি, ০২ টি মোটরসাইকেল ও লুন্ঠিত ০১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ২০২১ ইং বেলা ১১ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ২৮ আগস্ট, ২০২১ ইং তারিখ একজন ব্যবসায়ী মতিঝিলের নিহন মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে গাড়িযোগে রওনা দেন। ০৬ জন ডাকাত মোটর সাইকেলযোগে উক্ত ব্যবসায়ীর গাড়ি অনুসরণ করে দুপুর অনুমানিক ০১টা ২০ ঘটিকায় মৌচাক ফ্লাইওভার এর উপর গাড়িটির গতিরোধ করে। ওই সময় ডাকাতরা আতংক সৃষ্টির জন্য ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এবং হাতুড়ি দিয়ে গাড়ির দরজার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। এসময় ডাকাতরা গাড়ির ব্যাকডালা খুলে ভিতর থেকে একটি কালো ব্যাগে রক্ষিত ৬০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট, ২০২১ তারিখ ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়।
তিনি বলেন, এছাড়াও উক্ত ডাকাত দল গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখ অপর এক ব্যবসায়ী মতিঝিল হতে একটি ব্যাগে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় উক্ত ডাকাত দলের সদস্যরা ০৩ টি মোটরসাইকেল যোগে তাকে অনুসরণ করতে থাকে। উক্ত ব্যবসায়ী বেলা ০১টা ৫০ ঘটিকায় নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় পৌঁছামাত্র ডাকাত দলের সদস্যরা তার গতিরোধ করে ২৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাৎক্ষনিক পথচারীগণ জড়ো হয়ে প্রতিরোধ করতে চাইলে ডাকাতরা পথচারীদের লক্ষ্য করে ০২ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়। এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা রুজু হয়। চাঞ্চল্যকর ডাকাতির এই ২টি ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা রমনা বিভাগের রমনা জোনাল টিম।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিশেষ করে শনিবারকে ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। তারা প্রত্যেকেই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য। এই ডাকাত দলের একটি গ্রুপ মানি এক্সচেঞ্জ এলাকায় অবস্থান করে যে সকল ব্যবসায়ী অধিক পরিমাণে টাকা বহন করে তাদের টার্গেট করে। টার্গেটকৃত ব্যক্তির তথ্য তাদের সহযোগী মোটরসাইকেলে অবস্থানকারী গ্রুপকে প্রদান করে। তারা টার্গেটকৃত ব্যবসায়ীকে অনুসরণ করতে থাকে এবং সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছলে ফাঁকা গুলি করে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে উক্ত ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মূল্যবান জিনিসপত্র ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত জলিলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। উপরোক্ত ২টি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত হতে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ডিএমপির কোতয়ালী থানায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।
ঢাকা মহানগরের যেকোনো এলাকায় ডাকাতি কিংবা কোনো গুলির ঘটনা ঘটলে কাউকে ছাড় দেযা হবে না। এরূপ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
উল্লেখ্য, গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক এর তত্ত্বাবধানে রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস, পিপিএম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.