রাকসু নির্বাচন দিতে রাবি প্রশাসনের কালক্ষেপন

রাবি প্রতিনিধি: দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙ্গে গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন আগামী নভেম্বর মাসে আয়োজন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন গুলোর ইতিবাচক মনোভব থাকলেও বিশ্বদ্যিালয়ের প্রশাসন নির্বাচন দিতে কালক্ষেপন করছে বলে অভিযোগ বিশ^বিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের।

রাকসু সংলাপ কমিটি সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি কমিটি গঠনের পরে ১২টি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন এবং ১১টি অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন মোট ২৩টি দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের রাকসু সংলাপ কমিটি। এই ছয় মাসে ছাত্রসংগঠনের সাথে শুধুমাত্র সংলাপ শেষ করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।

কালক্ষেপনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ কুমার বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘সবাই চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন হোক। কিন্তু গত ২৯ বছরেও সেই নির্বাচন হয়নি। সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং বড় দুটি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল এছাড়াও বিশ^দ্যিালয়ের কোন দল দৃশ্যত এই নির্বাচনের বিরোধিতা করেনি। তাহলে সমস্যা কোথায় নির্বাচন দিতে।’

বিশ^বিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমরা সাধারন শিক্ষার্থীদের সব ধরনের যৌক্তিক দাবির সাথে পাশে থেকে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে রাকসুর ভূমিকা পালন করেছি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাকসু নির্বাচন সব সময় চাই। কিন্তু এটা আমাদের আয়োজনের বিষয় নয়। প্রশাসন আয়োজন করলে আমরা তাতে অংশ নেব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন যেহেতু ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করার একটা ব্যাপার যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা সবসময় চায় যে তাদের প্রতিনিধি তাদের দাবি গুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে তাদের প্রতিনিধিত্ব করুক। কিন্তু প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিজেদের মুঠোর ভিতরে রেখে দামিয়ে রাখতে রাকসু নির্বাচন দিতে গাফিলতি করছে বলে আমি মনে করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, ‘এতদিন রাকসু না থাকাতে সাধারন শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করেছে রাবি প্রশাসন, এতে হয়ত সরকার দলীয় প্রশাসনের অন্য কোন স্বার্থ ছিল যেটা এখনও বহাল আছে। আর এটার প্রমান মিলছে রাকসু নির্বাচন নিয়ে এত কালক্ষেপন করার মাধ্যমে।’

এ বিষয়ে রাকসু সংলাপ কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে সংলাপ শেষ করেছি সামনে সপ্তাহে হল প্রশাসন পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার সাথে পর্যায়ক্রমে বসে সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারব।’

কালক্ষেপনের ব্যাপারে তিনি বলেন ‘দীর্ঘ রমজানের ছুটির কারনে আমাদের কার্যক্রমে ব্যঘাত ঘটেছে তাছাড়া নির্বাচন দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন গাফিলতি নেই বরং প্রশাসন নির্বাচন দিতে খুবই সোচ্চার এবং ইতিবাচক।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য করতে আমরা প্রশাসন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

আর কালক্ষেপনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘রাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রদের নির্বাচন আর এই নির্বাচন সব ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করা এবং সুষ্টু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।’

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর  রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.