রংপুরে মৎস্যজীবিদের বিল নিলামকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে থানায় মামলা :  মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা

রংপুর প্রতিনিধি: মিঠাপুকুরে বিল নিলামকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় মৎস্যজীবীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে। এছাড়াও, রংপুর জেলা প্রশাসক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ইউএনও ও উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা।মৎস্যজীবিরা। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, “বড় হযরতপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতি লি. “১৯৭৪ সাল হতে উপজেলার সেরুডাঙ্গা বিল লীজ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। চলতি অর্থ বছরে ওই বিলটি নিলাম ডাকে অংশ নেয় ওই সংগঠনটি।

অপরদিকে, নিলাম ডাকে ‘সমাজ ভিত্তিক ভুমিহীন ক্ষুদ্র মৎসজীবি উন্নয়ন সংস্থা”সেরুডাঙ্গা শাখা অংশ নেয়। বড় হযরতপুর মৎসজীবি সমিতি’র সদস্যদের অভিযোগ, সমাজ ভিত্তিক ভুমিহীন ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি সংস্থাটি প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতি নয়।

এছাড়াও, শাখা কার্যালয় খুলে তারা অবৈধভাবে নিলাম ডাকে অংশ গ্রহণ করেছেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রকৃত মৎস্যজীবিদের কোনঠাসা করার চেষ্টা করছেন।
ইতোমধ্যে, লাভলু মিয়া নামে একজন মৎস্যজীবিকে বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করেছেন তারা। তিনি মিঠাপুকুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন মৎস্যজীবীরা।

সরেজমিনে সেরুডাঙ্গা বিলে গিয়ে দেখা গেছে, বিল পাড়ের প্রায় ৫’শ মৎস্যজীবির বসবাস সেখানে। তারা সকলেই ওই বিলের উপর নির্ভরশীল। জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন এই বিলটি।

ওই বিল পাড়ের মৎস্যজীবি সত্য চন্দ্র দাশ বলেন, আমরা ১৯৭৪ সাল হতে বিলটি লিজ নিয়ে মৎস্য চাষ করে জীবন ধারন করছি। স্থানীয় একটি অমৎস্যজীবি প্রভাবশালী চক্র বিলটি অবৈধভাবে দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর হামলা ও মামলা চাপিয়ে দিচ্ছে তারা।

গতকাল রোববার বিকেলে এর প্রতিবাদে বিল পারে বসবাসকারী মৎস্যজীবিরা মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। মানব বন্ধনে ৩শ মৎস্যজীবী অংশ গ্রহণ করেন।

বড় হযরতপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতি’র সভাপতি খিতিশ চন্দ্র দাশ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা প্রকৃত মৎস্যজীবি। এই বিলের উপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি। প্রভাবশালীরা আমাদের কোনঠাসা করার চেষ্টা করছেন।

আরেক মৎস্যজীবী আরতি রাণী দাশ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বীলে মৎস্য আহরন করতে না পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।

উপজেলা মৎস্যজীবি সংগঠনের নেতা সুধির চন্দ্র জীবন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বড় হযরতপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি. একটি প্রকৃত মৎস্যজীবি সংগঠন। অপরদিকে, সমাজ ভিত্তিক ভুমিহীন ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি সংস্থাটি বেশিভাগ সদস্য মৎস্যজীবি নয়। তারা অবৈধভাবে নিলাম ডাকে অংশ নিয়ে বিলটি দখলের চেস্টা চালাচ্ছে।

এবিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে প্রায়ই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে থাকে স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি কোনোভাবেই মীমাংসা করা সম্ভব হচ্ছে না আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের সংঘর্ষের ঘটনা গুলো মীমাংসা করতে চাইলেও বিভিন্ন অদৃশ্য কারণে ব্যর্থ হই তাই দু’গ্রুপের পক্ষে-বিপক্ষে বলার মত আমার কাছে এখনও সিদ্ধান্ত নেই তবে প্রকৃত মৎস্যজীবি ও বিল পাড়ের বসবাসকারীদের বিলটি অগ্রাধীকার ভিত্তিতে পাওয়ার যোগ্য। বিশেষ করে, যাদের বিলের উপর জীবন-জীবিকা নির্ভর করে তারাই বিলটি পাওয়ার যোগ্য। 
তবে স্থানীয়দের দাবি দ্রুত বিষয়টি মীমাংসা করে শান্তি ফিরে আসুক মৎস্যজীবীদের মধ্যে এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়েছেন তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর প্রতিনিধি এস এম রাফাত হোসেন বাঁধন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.