রংপুরে ভিজিএফর ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার আ: লীগের ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩

রংপুর ব্যুরো: পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে হত দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ভিজিএফ এর চাল কালো বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে গোডাউনজাত করার অভিযোগে রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা সোহেল রানাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১ টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত স্থানীয় পালিচড়া বাজারে এই অভিযান চলে। এসময় ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেত্রী নাছিমা জামান ববি ও ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা মাসুদার রহমান মিলন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের সময় উপস্থিত রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলন বিটিসি নিউজকে জানান, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের প্রায় ৬ হাজার ২৯০ জন সুবিধাভোগির মাঝে বিতরণের জন্য গত মঙ্গলবার ৩ হাজার ১৪৫ বস্তা চাল ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়।

গতকাল বুধবার ইউপি মাঠে দিনভর চাল বিতরণ করা হলেও সন্ধা নাগাদ ৫০-৫৫ জন হত দরিদ্র চাল পায় নি। তারা চালের দাবিতে মাঠেই বিক্ষোভ শেষে ইফতার করে। রাত সাড়ে ৮ টায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা চাল না পাওয়া হতদরিদ্রদের নাম লিখে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চাল দেয়ার আশ্বাস দেন।

অভিযানের সময় উপস্থিত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান যুব আওয়ামীলীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক নাছিমা জামান ববি বিটিসি নিউজকে জানান, বুধবার রাত ৯ টায় একটি অটোতে করে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফ এর চালের ৩০ বস্তা চাল স্টেশন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় নগরীর দর্শনায় স্থানীয়রা আটকে দেয়। খ

বর পেয়ে চালের বস্তাগুলো তাজহাট থানা পুলিশ জিম্মায় নেয়। এসময় অটো চালক উজ্জলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও বিপুল পরিমান চাল পালিচাড়া হাটের কয়েকটি গোডাউনে রাখা হয়েছে তথ্য পায় পুলিশ। বিষয়টি র‌্যাবের নজরে আসলে বুধবার দিবাগত রাত ১ টায় পালিচাড়া হাটে চাল উদ্ধারে অভিযান চালায় র‌্যাব।

এসময় তিনটি গোডাউন থেকে ৬০০ বস্তা খাদ্য অধিদপ্তর লেখা চালের বস্তা উদ্ধার করে তারা। এসব বস্তা হত দরিদ্রদের না দিয়ে কালোবাজারে গুদামজাত করে রাখা হয়েছিল। এসময় র‌্যাব ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা, ব্যবসায়ি আশরাফুল ইসলাম ও আকমল হোসেনকে গ্রেফতার করে।

উপজেলা চেয়ারম্যান বিটিসি নিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রী হত দরিদ্রদের ভালোভাবে ঈদ করার জন্য চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু এক শ্রেণির নীতিভ্রষ্ট জনপ্রতিনিধি তা কালোবাজারে বিক্রি করে অসহায়দের ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্ছিত করছে। এরসাথে অনেক নীতিভ্রস্ট সরকার দলীয় নেতাকর্মী নামধারী ব্যক্তিও আছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

এ ব্যপারে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলী নেতা সোহেল রানা বিটিসি নিউজকে জানান, বুধবার ইফতারের আগ মুহুর্তে চাল বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিছু স্লিপ পাওয়া ব্যাক্তি চাল পায় নি।

তাদের আজ বৃহস্পতিবার চাল দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচিত আওয়ামীলীগ প্রার্থী চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ না করায়, তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে হেয় করার জন্য র‌্যাব দিয়ে অভিযান পরিচালনা করিয়েছেন।

আমি ৯ টি ট্রাকে ৩ হাজার ১৪৫ বস্তা চাল এনে পরিষদের গোডাউনে গুদামজাত করি এবং তা বিতরণ করি। যেসব বস্তা বাইরের গোডাউনে পাওয়া গেছে তা পরিষদের নয়।

উপকারভোগিরা চাল নিয়ে সেগুলো ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করেছেন। ব্যবসায়িরা তা কিনে গুদামজাত করেছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.