যৌতুক না দেওয়ায় গরম তেল ঢেলে স্ত্রীকে হত্যা!

ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার: রাজধানীর আশুলিয়ায় যৌতুক না দেওয়ায় স্ত্রী স্বর্ণা বেগমকে (৩৫) শরীরে গরম তেল ঢেলে হত্যা করেছেন স্বামী সজনু মিয়া (৩৮)।
আজ বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে আশুলিয়া থানার জিরানীর টেঙ্গুরী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বর্ণাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৬ অক্টোবর ভোরে তিনি মারা যান। তার শরীরের প্রায় ৫২ শতাংশ পুড়ে যায়।
এ ঘটনায় গত ১ অক্টোবর ভুক্তভোগীর মা মোছা. শিরিন বেগম (৫০) সজনুর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তার জানান, এ ঘটনা পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। আসামী একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করছিলেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দিনগত রাতে এলআইসির একটি দল সজনুকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে।
তিনি জানান, স্বর্ণার সঙ্গে ২০০৭ সালে পারিবারিকভাবে সজনুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা জামালপুরের সজনুর গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় ও সংসারের ভরণ পোষণ সঠিকভাবে দেওয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে প্রায় সময় নির্যাতন করায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।
এর আগে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক নির্যাতন করায় স্বর্ণার দুলা ভাই মো. ময়নুল ইসলাম বাদী হয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় সজনু প্রায় আড়াইমাস কারাভোগ করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় সজনু ও তার পরিবারের সদস্যদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন।
মুক্তা ধর বলেন, এরপর আবার নির্যাতন শুরু করেন সজনু। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় ছয় মাসে আগে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান স্বর্ণা। সেখানে সন্তান রেখে আশুলিয়ার জিরানী এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন তিনি। কিন্তু সজনু কৌশলে তার বর্তমান ঠিকানা সংগ্রহ করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর স্বর্ণার বাড়িতে যান। সেখানে যৌতুকের টাকা দাবি করেন তিনি। এ টাকা দিতে অসম্মতি জানালে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তার শরীরে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী। পরে প্রতিবেশিরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে জামালপুর সরিসাবাড়ী নিয়ে গেলে সজনুর পরিবারের সদস্যরা স্বর্ণাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ভর্তি না করে ফেলে রেখে পালিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বর্ণাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায় ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ০৬ অক্টোবর ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, আসামী তার স্ত্রীকে গরম তেল শরীরে ঢেলে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। যৌতুক দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় এবং স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে বাঁধা দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে সজনু।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার মো: রুহুল আমীন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.