যে কোন শর্তে পরিবার নিয়ে বাঁচতে চাই, প্রশাসনের কাছে আকুতি রফিকুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে মাদক বহন কাজ ছেড়ে দেওয়ায় মাদক ডিলারের অব্যাহত হুমকিতে নিরপত্তাহীনতায় ভূগছেন মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক মাদক বহনকারী লেবার। তিনি রাজশাহী নগরীর উপকন্ঠ দামকুড়া থানার জাঙ্গালপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে।
এ নিয়ে ভূক্তভোগী রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা প্রশাসক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, রাজশাহী, আরএমপি পুলিশ কমিশনার, পুলিশ মহা-পরিদর্শক, হেড কোয়াটার, ঢাকা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর পৃথক পৃথক ভাবে ৫টি অভিযোগ সরাসরি ও ডাক যোগে প্রেরণ করেছেন।
ভূক্তভোগী রফিকুল ইসলাম জানান, তার পাশের বাড়ির মোঃ আব্দুল মান্নানের তিন ছেলে মোঃ মাসুম ওরফে পা মোটা মাসুম (৩৭), মাসুদ ওরফে রায়হান (৩০) ও মোঃ রমজান আলী তারা এলাকায় দীর্ঘ ২০/২৫ বছর যাবত প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এছাড়াও তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন পরিবহন যোগে মাদক সরবরাহ্ করে থাকে।
মাদক ডিলার মাসুমের বিরুদ্ধে ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, চাপাইনবাবগঞ্জ-সহ আরএমপি’র দামকুড়া থানায় মোট ২৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি মাদক মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে তার। রমজানের বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি মাদক মামলা এবং তার ভাই মাসুদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে ৩টি।
তারা অবৈধ অস্ত্র, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল ও ইয়াবা ট্যাবলেটের পাইকারী ব্যবসা করে বলে দাবি ভ‚ক্তভোগীর। এলাকায় প্রকাশ্যে হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইনের ব্যবসা চালালেও অজ্ঞাত কারনে তারা ধরা পড়ে না। এমনকি তাদের বাড়িতে মাদক আছে এমন তথ্য দিলেও কেউ তাদের ধরতে যায় না বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
তিনি আরও বলেন, নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর এলাকার জনৈক একজন মাদকাসক্ত এবং টাউট প্রকৃতির সাংবাদিক রয়েছে তাদের সাথে।
সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছে ভয় দেখিয়ে মাদক সেবন করে থাকে। তার কাছে অনেক মাদক কারবারি হাজার, হাজার টাকা পাবে। সে অনলাইন নিউজ পোর্টালের কার্ড মাদক কারবারিদের কাছে বিক্রি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফ্রি’তে ফেনসিডিল সেবন ও মাদকের তদবির তার আয়ের উৎস। দিনের অধিকাংশ সময় পড়ে থাকে মাদক পল্লিতে। সেই সাংবাদিকের সহযোগীতায় কুখ্যাত মাদক ডিলার মাসুম-সহ তার দুই ভাই প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা করে বলেও দাবি করেন ভূক্তভোগী। এই মাদক কারবরিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক সরবরাহ্ করে থাকে। প্রশাসনের হাতে ধরা পড়লে দামি প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাস যোগে মাদক কারবরি রমজান আর জনৈক সাংবাদিক ছুটে যায় তদবির করতে। মাদক কারবারি রমজান কথিত সেই সাংবাদিকের দেয়া কার্ড প্যান্ডের সাথে ঝুলিয়ে রাখে এবং নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে বলে জানায় রফিকুল ইসলাম।
ভূক্তভোগী রফিকুল ইসলাম স্বিকার করে বলেন, আমি নিজে তাদের মাদক বহনকারী লেবার ছিলাম। গত ৩বছর আগে আমার বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আমার জামাই একজন আনসার বাহিনীর সদস্য। মেয়ে জামাইয়ের এক প্রকার চাপে পড়ে গত ৩বছর যাবৎ আমি তাদের মাদক বহন কাজ ছেড়ে হাটে গরু-মহিষের ব্যবসা করছি।
এছাড়াও নিজ বাড়িতে বাচ্চা গরুও মহিষ পালন করে হাটে বিক্রি করি। মাদক ডিলারদের অপকর্ম থেকে সরে আসায় তারা আমাকে প্রায় প্রশাসন দিয়ে হয়রানী করছে। গত ৩বছরে আমাকে ৪টি মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তকর ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ডিবি পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের (আবগারি) আমার বাড়িতে পাঠায় মাদক কারবারি তিন ভাই। প্রশাসন ভুল বুঝে আমার স্ত্রী কণ্যাদের ধমক দেয় এবং আটকের ভয় দেখায়। এই মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে রাতের আধারে মাদক রেখে প্রশাসন দিয়ে তাদের ধরিয়ে দেয়।
তাদের সার্বিক কর্মকান্ডে আমার জিবনে হতাশা নেমে এসেছে। মাঝে মধ্যে মনে হচ্ছে মৃত্যুই আমার মুক্তির একমাত্র পথ। কিন্তু আমার ১৪ বছর বয়সি ছেলে পড়ে ৮ম শ্রেণীতে, ৯ বছর বয়সি মেয়ে পড়ে ৪র্থ শ্রেণীতে এবং একটি শিশু কণ্যার বয়স ৪ বছর। তাদের মুখের আহার যোগানোর মতো আমি ছাড়া দ্বিতীয় কোন অবলম্বন নেই। তাদের কথা ভেবে আমাকে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। সম্প্রতি (গত ১৬ মার্চ ২০২৩) বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অনন্য উদ্যোগে নেতিবাচক জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করছে বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত ও জামিনপ্রাপ্ত ১১১জন জঙ্গি।
আরএমপি’র বেলপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) নিকট হাজিরা দিচ্ছেন অভিযুক্ত ও জামিনপ্রাপ্ত জঙ্গিরা। জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা প্রসঙ্গে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোঃ আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, এটি আরএমপি’র প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম।
সেই সংবাদটি আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। আমিও তাদের মতো বৌ-বাচ্চাদের নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছি। যে কোন শর্তে আমি আমার পরিবার নিয়ে বাঁচতে চাই বলেও জানান ভ‚ক্তভোগী রফিকুল ইসলাম।
এ ব্যপারে জানতে মাসুমের মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি পালিয়ে থাকায় তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
মুঠো ফোনে জানতে চাইলে মোঃ রমজান আলী জানায়, আমি রাজশাহীর একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করি। মাদক ব্যবসা করি না। তবে তার ভাইদের বিষয় এড়িয়ে যান।
এ ব্যপারে জানতে মুঠোফোনে ফোন দিলে দামকুড়া থানার অফিসারে ইনচার্জ (ওসি) জানান, আমি খুব ব্যস্ত আছি, দুই মিনিট পর আপনাকে ফোন দিচ্ছি। কিন্তু ২৪ মিনিট অপেক্ষার পর একাধিক বার তার তাকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.