বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধ আর ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝেই রেকর্ড মুনাফা করেছে অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নতুন এক রিপোর্ট বলছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের আয় পৌঁছেছে প্রায় ৬৭৯ বিলিয়ন ডলারে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিপ্রির প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শীর্ষ ১০০ কোম্পানির অস্ত্র ও সামরিক সেবার রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৬৭৯ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং সামরিক বাজেট বাড়ার ধারাবাহিকতা এই আয়ের মূল চালিকাশক্তি।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর আয় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে মোট ৩৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। লকহেড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুম্যান ও জেনারেল ডায়নামিকস ছিল শীর্ষে।
ইলন মাস্কের স্পেসএক্স প্রথমবারের মতো তালিকায় জায়গা পেয়েছে। তাদের প্রতিরক্ষা আয় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। ইউরোপের ২৬ কোম্পানির সম্মিলিত আয় ১৩ শতাংশ বেড়ে মোট ১৫১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ তৈরি করে চেক কোম্পানি ‘চেকোস্লোভাক গ্রুপ’ ১৯৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করেছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তালিকায় রাশিয়ার দুটি কোম্পানি আছে, যাদের সম্মিলিত আয় ২৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে। অপরদিকে চলমান রুশ আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের জেসিএস ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি আয় বাড়িয়েছে ৪১ শতাংশ। যুদ্ধের কারণে দুই দেশেই বাড়ছে অস্ত্রের চাহিদা।
প্রথমবারের মতো শীর্ষ ১০০-তে মধ্যপ্রাচ্যের ৯টি কোম্পানি জায়গা পেয়েছে। ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সম্মিলিত আয় হয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলার। তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের তিন কোম্পানি আয় বাড়িয়েছে ১৬ শতাংশ। শুধু এলবিটের আয়ই ৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার।
তুরস্কের পাঁচ কোম্পানি মিলিয়ে আয় করেছে ১০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। দেশটির বাইকার কোম্পানির ৯৫ শতাংশ রফতানি-নির্ভর আয়ই এখন বৈশ্বিক ড্রোন বাজারের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে।
এদিকে চীনের ৮টি বড় প্রতিষ্ঠানের আয় কমেছে ১০ শতাংশ। বিশেষ করে নরিনকো’র আয় ৩১ শতাংশ কমেছে, যার প্রভাবে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলের মোট বিক্রি খানিকটা হ্রাস পেয়েছে। তবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় চিত্র উল্টো। তীব্র চাহিদা ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ ও ৩১ শতাংশ। কোরিয়ার হানহোয়া গ্রুপের বিক্রিই বেড়েছে ৪২ শতাংশ। #















