ম্যাজিস্ট্রেট সেজে দোকানদারকে করতেন জরিমানা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে ম্যাজিস্ট্রেট সেজে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার পঞ্চগড় জেলা শহরে স্যামসাং শো রুমের তৃতীয় তলার বাংলাদেশ কনজুমার রাইটস সোসাইটি নামের কার্যালয় থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, বাংলাদেশ কনজুমার রাইটস সোসাইটি পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মফিজুল ইসলাম (৫২), সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম (৪৭) ও সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম (৪৫)।
এদের মধ্যে মফিজুলের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার আমতলা কাজীপাড়া এলাকায়, আমিনুলের বাড়ি পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের ঝাকুয়াকালি এলাকায় এবং সাদেকুল ইসলামের বাড়ি জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকায়। তিনজনের মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা পালন করতেন আমিনুল ইসলাম।
ভুক্তভোগিরা জানায়, বাংলাদেশ কনজুমার রাইটস সোসাইটি পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি ও সম্পাদকসহ কমিটির এই ১০ সদস্য বিভিন্ন স্থানে নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ও জরিমানা আদায় করে আসছিলেন। গ্রামের সহজ সরল মানুষের দোকানে অভিযান চালিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছিলেন টাকা।
১০ সদস্যের এই ভুয়া ভ্রাম্যমান আদালত টিম গত সোমবার পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকার ১০ টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করে টাকা আদায় করে। মঙ্গলবার একই কায়দায় মাইক্রোবাস নিয়ে তারা অভিযানের জন্য প্রস্ততি নেয়ার সময় তাদের ৩ জনকে আটক করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়।
সাতমেরা বাজারের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, তারা ৪ জন একটি মাইক্রোবাসে করে আমাদের বাজারে আসে। এ সময় নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে আমাদের জানায় তাদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করার ক্ষমতা রয়েছে। সেখান থেকে তারা প্রথমে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করতে চায়। পরে দুই হাজার টাকা জরিমানা করে টাকা নিয়ে দ্রুত চলে যায়। পরে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হই এরা প্রতারক। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের সহকারী পরিচালক শেখ সাদী বিটিসি নিউজকে বলেন, এই চক্রটি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করছিল। শুধু পঞ্চগড় নয় অন্য জেলাতেও এমনটি করেছে। তাদের সাথে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কোন সম্পর্ক নেই। কখনোই ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ছাড়া ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হয় না। তাদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরাই মামলা করছে।
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার রায় বিটিসি নিউজকে বলেন, আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। এছাড়া এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসাইন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.