মৌসুম শেষে খালি হাতে ফিরলো নাটোরো নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের আখচাষীরা

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে মৌসুম শেষ হলেও বকেয়া প্রায় ৩৫ কোটি টাকার কিছুই পেল না নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের আখচাষীরা। সম্প্রতি পাওনা পরিশোধ না করেই ২০১৮-২০১৯ সালের আখ মাড়াই মৌসুম বন্ধ করেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, প্রায় আড়াই মাস আখ সরবরাহ শেষে আখচাষীদের পাওনা হয়েছিল প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। আখচাষিদের এতো অধিক পরিমানে টাকা বকেয়া রেখে মিল বন্ধ ঘোষণাটি মিলটির ইতিহাসে নিজরবিহীন।

দীর্ঘদিন ধরে আখচাষীরা পাওনা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছে। টাকার অভাবে সঠিক ভাবে তারা তাদের জমিতে আবাদ করতে পারছেনা।

আব্দুল ওয়াহেদ নামের এক আখচাষী বিটিসি নিউজকে জানান, তিনি মিলে ৫০ গাড়ি আখ সরবরাহ করেছেন। এর মধ্যেমাত্র ৭ গাড়ি আখের টাকা পেয়েছেন বাকি ৪৩ গাড়ি আখের মূল্য বাবদ প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, মিলের এমন হাল তার জীবনে আর দেখেননি।

আখচাষী সামসুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, এখনতো মিল বন্ধ হয়ে গেল, আমাদের পাওনা কবে পাবো তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বিটিসি নিউজকে জানান, চলতি মাড়াই মৌসুমে ১২৬ কর্মদিবসে প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ১৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়েছে। বর্তমানে মিলের গোডাউনে ৮ হাজার মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত রয়েছে। যার বাজার মূল্য ৪০ কোটি টাকা।

আখচাষীদের পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে তিনি জানান, মিলগেটে আমরা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আখচাষীদের পাওনা পরিশোধ করেছি, প্রতি কার্যদিবসে একদিনের করে পাওনা পরিশোধ করার চেষ্টা করছি। অর্থ পেলে একযোগে সকল পাওনা পরিশোধ করা হবে। আখচাষীদের পাওনা
পরিশোধের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থ চাওয়া হয়েছে। তবে এই অর্থ কবে নাগাদ পাওয়া যাবে সে বিষয়ে তিনি পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ১২০ কর্মদিবসের লক্ষে মাড়াই মৌসুম শুরু করে মাত্র ৩০ কর্ম দিবসের মাথায় টাকার অভাবে গত ২৬ ডিসেম্বর আখচাষীদের পাওনা পরিশোধ প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে মাড়াই চালিয়ে যায়। এর পর পরিশোধ প্রক্রিয়া দীর্ঘ ৬৭ দিন বন্ধ রাখার পর গত ৩ মার্চ আবার টাকা দিতে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত মিলটি ৬ জানুয়ারী পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করেছে, আড়াই মাসের পাওনা বাকি রয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.