মেয়ের ধর্ষণচেষ্টার বিচার চেয়ে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসলেন কৃষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে মেয়ের ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাওয়ায় হানিফ শেখ (৬২) নামে এক কৃষককে উল্টো ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এমনকি তার এসএসসি পরীক্ষার্থী নাতিকেও ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করছে বলেও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কৃষকের স্ত্রী ও মেয়েরা এমন অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী হানিফ শেখের বাড়ি নগরীর মেহেরচন্ডী এলাকায়। তার চার মেয়ে। আর অভিযুক্তরা হলেনÑ একই এলাকার মৃত জসিম কামারের ছেলে মো. কুরমান, তার স্ত্রী মোসা. সুমি, বোন মোছা. আঙ্গুরা বেগম, নুরজাহান ও ভাগ্নে রমজান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী কৃষকের স্ত্রী শহর বানু।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আমার ছোট মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টা চালায় কুরমান আলী। থানায় মামলা করলে সে গ্রেপ্তার হয়। তবে জামিনে বেরিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। মামলা প্রত্যাহার না করায় আমার স্বামীর বিরুদ্ধে এ বছরের ২৫ এপ্রিল ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে তার বোন আঙ্গুরা। অথচ মামলায় উল্লেখকৃত ঘটনার সময় আমার স্বামী গ্রামেই ছিলেন না। তিনি পাশের বাজারের একটি ইলেকট্রিক্যালের দোকানে ছিলেন।
শহর বানু বলেন, মামলার আগে আসামিরা কয়েক দফায় হামলা চালায় আমাদের ওপর। এ বছরের ১২ জানুয়ারি আমার ওপর হামলা চালায় কুরমান ও তার ভাগ্নে রমজান। আমার মাথায় আঘাত করে। আমাকে বাঁচাতে আসলে আমার মেজো মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আমার মেয়ের ডান হাতে চারটি সেলাই দিতে হয়। ওই হামলার ঘটনায় জড়িত কুরমান ও রমজান ছাড়াও সুমি, নুরহাজাহান, আঙ্গুরার বিরুদ্ধে ৩০ জানুয়ারি আদালতে মামলা দায়ের করি। বাঁচার জন্য ২০ বছর আগে ক্রয়কৃত একটি জমির ইস্যু তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয় জেলা লিগ্যাল এইডে। আমার নাতি এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. অভিকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। সেখানে আমার স্বামী হানিফ শেখকেও অভিযুক্ত করে। যা হাস্যকর।
কৃষকের স্ত্রী বলেন, অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় খারিজ করে দেন লিগ্যাল এইডের ম্যজিস্ট্রেট। আমার মামলায় ১৩ মার্চ কয়েকজন জামিন নিয়ে এসে আবারো হামলা চালায় আমার ওপর। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ১ মাস ৭ দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিই। মাথায় ৭টি সেলাই দিতে হয়েছে। হাতে রড ঢুকানো রয়েছে এখন।
শহর বানুর মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এ ঘটনায় আমি পৃথক একটি মামলা করি। তবে আসামি আঙ্গুরা আমার বৃদ্ধ পিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করেছে। ওই মামলার অন্যতম স্বাক্ষী মোহাম্মদ অনেকদিন থেকে খারাপ উদ্দেশ্যে বিরক্ত করে আসছিল। মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া আমার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে তাকে ধর্ষণ মামলা ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে আঙ্গুরা, নুসরাত, সুমি ও নুরজাহান। এসব ঘটনায় কৃষকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ধর্ষণ মামলার সঠিক তদন্ত করে সেটি প্রত্যাহার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পূর্বে ধর্ষণচেষ্টা ও দফায় দফায় হামলার ঘটনায় আসাসিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায় নি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.