মেয়েকে স্ত্রী দাবি, মুলাদীতে ১৩ সন্তানের জনক ভন্ডফকির গ্রেফতার

বরিশালের মুলাদীতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মেয়েকে স্ত্রী দাবী করার ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক আমিনুর, পিছনে দাঁড়িয়ে দুই স্ত্রী এবং কণ্যা লামিয়া।

বরিশাল ব্যুরো: স্ত্রীর আগের ঘরের কন্যাকে চতুর্থ স্ত্রী দাবি করে আদালতে মামলা করার পর বেরিয়ে এলো এক ভন্ড ফকিরের আসল চরিত্র।
বরিশালের মুলাদী উপজেলার খালাসিরচর গ্রাম থেকে ওই ভন্ড ফকিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদর ইউনিয়নের খালাসিরচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভন্ড ফকির ১৩ সন্তানের জনক আমিনুর বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আমিনুরের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে একটি ছুরি, দা, একটি চাপাতি, রামদা এবং বিপুল পরিমাণ ফকিরি বই উদ্ধার করে পুলিশ।
আমিনুর বেপারী খালাসিরচর গ্রামের মৃত মুজাহার বেপারীর ছেলে।

দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়ফুঁকের নামে এলাকায় প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। নারী লোভী আমিনুর বিয়ে গোপন করে একের পর এক বিয়ে করে নারীদের সর্বনাশ করে আসছেন। বর্তমানে তিন স্ত্রী ছাড়াও আগে তিনটি বিয়ে করেছেন তিনি।

মুলাদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, স্ত্রী ইয়াসমিনের আগের স্বামী আলাউদ্দীন বেপারীর কন্যা লামিয়া খানমকে নিয়ে নিজের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল ভন্ড ফকির আমিনুর। লামিয়া ধীরে ধীরে বড় হওয়ায় তার ওপর আমিনুরের কু-নজর পড়ে। পরবর্তীতে আমিনুর ফকির প্রতারণার মাধ্যমে আদালতের একটি এফিডেভিট দেখিয়ে স্ত্রী ইয়াসমিনের কন্যা লামিয়াকে চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে দাবি করে। কন্যাকে স্বামীর হাত থেকে রক্ষা করতে মা ইয়াসমিন প্রায় এক বছর আগে লামিয়াকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। সেখানেই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন ইয়াসমিন।

এরমধ্যে গত ১৪ আগস্ট লামিয়াকে পাওয়ার জন্য বরিশাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করে ভন্ড ফকির আমিনুর। আদালত কাগজপত্রের সূত্রে লামিয়াকে উদ্ধার করে আমিনুরের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য মুলাদী থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে পুলিশ লামিয়ার মা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বললে বেরিয়ে আসে ভন্ড ফকির আমিনুরের আসল চরিত্র। ওই সময় ইয়াসমিন পুলিশকে জানান, আমিনুরের তিনজন স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার কন্যা লামিয়াকে বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। সেই সঙ্গে ভুয়া এফিডেভিট তৈরি করে আদালতে মামলা করেছে আমিনুর।

এ নিয়ে তিন স্ত্রী প্রতিবাদ করলে চাপাতি, রামদা ও লোহার রড দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয় আমিনুর।

ওসি আরও জানান, প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে আমিনুরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আমিনুরের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে একটি ছুরি, দা, একটি চাপাতি, রামদা এবং বিপুল পরিমাণ ফকিরি বই উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় আমিনুরের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।#

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.