মেয়রের লোকজন কর্তৃক হামলার শিকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মেয়রের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: জমি সংক্রান্ত বিরোধে মেয়র মোখলেসুর রহমানের লোকজনের হামলার শিকার মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। মনিরুল তার লিখিত বক্তব্যে জানান, নিজস্ব সম্পত্তি কোন কারণে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত হবার পর তা নিজ নামে নিতে খতিয়ান পরিবর্তনের মামলা করেন মনিরুল।
মামলা চলমান অবস্থায়, সেই জমির প্রতি কু-নজর পড়ে মেয়র মোখলেসুর রহমানের। মেয়র সেই জমি দখল নিতে নানা পায়তারা শুরু করে। এক পর্যায়ে মেয়র ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালেহ উক্ত সম্পত্তিতে জোরপুর্বক পাকা দোকান নির্মান করে ভাড়া দেয়। মামলা চলমান থাকায় জমি দখল হবার পর মুনিরুল জেলা প্রশাসককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানান।
তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১০ আগষ্ট ও ১১ সেপ্টেম্বর দুইবার উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করেন সদর এসিল্যান্ড। নোটিশে নিজ খরচে সকল স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু নোটিশ পাবার পরও জমি থেকে দোকান উচ্ছেদ করেনি মেয়র বাহিনী। কিন্ত পরবর্তীতে কার্যত আর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি সদর এসিল্যান্ড অফিস।
মনিরুল জানায়, উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করার পরও অজ্ঞাত কারনে আজও বহাল তবিয়তে আছে দোকান ঘরগুলি। এক পর্যায়ে মেয়র মনিরুলকে দলিল নিয়ে ডেকে পাঠান মেয়র। মনিরুল পৌরসভায় মেয়রের সাথে দেখা করলে তাকে গোপন কক্ষে নিয়ে গিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করেন। নাহলে তাকে হয়রানি করাসহ মামলা দেয়ার হুমকি প্রদানও করেন মেয়র।
মেয়রের হুমকি পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে মনিরুল সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এর পরামর্শে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মাহবুব আলম। কিন্তু অদ্যাবধি কোন অগ্রগতি নেই হয়নি মামলার।
এরই জেরে ২২ অক্টোবর দুপুরে মেয়রের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী মনিরুলের নিকট তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মনিরুলের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে মেয়রের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান ও চাচাতো ভাই বাক্কার ও তার দলবল।
এ ঘটনার পর সদর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলেও এ বিষয়েও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি পুলিশ। পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের প্রভাব বিস্তারের কারণে ন্যায়বিচার হতে বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও দাবি করেন মনিরুল। মনিরুলের আশংকা যে কোনভাবে ওই জমি দখল করতে মরিয়া পৌর মেয়র মোখলেসুর।
আওয়ামীলীগের একজন একনিষ্ট কর্মী হয়েও আওয়ামীলীগ দলেরই মেয়র ও তার লোকজনের হুমকীতে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান। মনিরুল আরও জানান, সার্বিক বিষয় নিয়ে বারবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা জেলা প্রশাসন, উল্টো তাকেই হুমকি প্রদান করছে জেলা প্রশাসনের আওতাধীন ভুমি অফিসের কানুনগোসহ অনেকেই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিডিয়াকর্মীদের কাছে দাবী করেন, বাটোয়ারা সুত্রে যেহেতু জমির মালিক ও সরকারের মধ্যে আইনী লড়াই চলছে, সেহেতু মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় কোন পক্ষ বা সন্ত্রাসীরা কোনভাবেই যেন ও জমি জবর দখল করতে না পারে। সেজন্য তিনি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাদি মনিরুলের ছেলে ইবাদত হোসেন, পৌত্র রনু। এসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলমগীর কবির কামাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শহীদুল হুদা অলক, সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামাল উদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু, মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাজেদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কামাল শুকরানাসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.