মৃত মানুষের অস্থিচূর্ণ খেতে বাধ্য করা হলো নারীকে

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গর্ভধারণের টোটকা হিসেবে মানুষের অস্থিচূর্ণ বা গুঁড়া খেতে বাধ্য করা হয়েছে এক নারীকে। এক তান্ত্রিকের সহায়তায় ওই নারীর স্বামী এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তাকে মানুষের অস্থির গুঁড়া খেতে বাধ্য করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনেতে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) পুনে পুলিশ ওই নারীর স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকজন এবং তান্ত্রিকসহ মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগপত্র দায়ের করেছে। ওই নারী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন।
পুনে সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) সুহাইল শর্মা বলেছেন, ‘পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮ এ, ৩২৩, ৫০৪, ৫০৬ এর পাশাপাশি কুসংস্কারবিরোধী আইনের ৩ ধারার (মহারাষ্ট্র প্রতিরোধ এবং মানব বলিদান নির্মূল এবং অন্যান্য অমানবিক, কুসংস্কা ও অঘোরী অনুশীলন এবং কালো জাদু আইন-২০১৩) এর অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে সাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে।’
প্রথম মামলায় ওই নারী উল্লেখ করেছেন, ২০১৯ সালে তার বিয়ের পর থেকেই তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নগদ টাকা, সোনা-রুপার অলংকারসহ বিভিন্ন ধরনের যৌতুক দাবি করেছে বারবার। দ্বিতীয় আরেকটি মামলায় ভুক্তভোগী নারী ওপরে বর্ণিত মৃত মানুষের অস্থিচূর্ণ জোর করে খাওয়ানোর অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দ্বিতীয় মামলায় ওই নারী অভিযোগ করেছেন, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বেশ কয়েকবার অমাবস্যার রাতে বাড়িতে তান্ত্রিক ডেকে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে এবং তাকে বেশ কয়েকবার একটি অজ্ঞাত আস্তানায় নিয়ে গিয়ে মৃত মানুষের অস্থির চূর্ণ খেতে বাধ্য করেছে।
ডিসিপি শর্মা আরও বলেছিলেন যে অন্য ধরনের আচারে শ্বশুরবাড়ির লোক ভুক্তভোগীকে মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন অঞ্চলের কিছু অজানা এলাকায় নিয়ে গিয়েছিল যেখানে তাকে একটি জলপ্রপাতের নিচে একটি “অঘোরী” (কালোজাদু) অনুশীলনে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হয়েছিল। এই অনুশীলনের সময়, তারা ভিডিও কলের মাধ্যমে ফোনে একজন জাদুবিদ্যার কাছ থেকে নির্দেশনাও নিচ্ছিল।
ডেপুটি কমিশনার সুহাইল শর্মা আরও বলেছেন, ‘একপর্যায়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভুক্তভোগীকে মহারাষ্ট্রের কোঙ্কান অঞ্চলের একটি অজ্ঞাত এলাকায় নিয়ে গিয়ে সেখানকার এক শ্মশানে নিয়ে অঘোরী তান্ত্রিক নির্দেশিত কালো জাদুর অনুশীলনে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছিল। এই অনুশীলনের সময় তান্ত্রিকরা ভিডিও কলের মাধ্যমে ফোনে নির্দেশনা দিয়েছিল।’
সুহাইল শর্মা আরও বলেছেন, ‘অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আমরা সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছি এবং মামলার তদন্ত শুরু করেছি। এরই মধ্যে আমরা সেই শ্মশানের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছি। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অভিযুক্তদের গ্রেফতার করব।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.