মৃত্যুপথযাত্রী রেজা পুলিশের উপর বোমা ছুড়েছেন!

 

ঢাকা প্রতিনিধিমৃত্যুপথযাত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নি নামে বিএনপির এক নেতাকে বোমা মারতে দেখেছে পুলিশ এমন অভিযোগে মামলা হয়েছে তার নামে! অথচ তিনি রাজধানী ঢাকার মিরপুর রোডের বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ডা. অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরীর অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মুঠোফোনে চুন্নি জানিয়েছেন, শৈলকুপা থানায় যেদিন মামলাটি রেকর্ড হয় সেদিন তিনি কেমোথেরাপি নিচ্ছিলেন। গত এক মাস ধরে তিনি ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নি শৈলকুপা শহরের কবিরপুরের বাসিন্দা ও শৈলকূপা পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি গত ১ নভেম্বর শৈলকুপা থানায় দায়েরকৃত ২৬৮ নং মামলার ৯নং আসামি।

মামলার এজাহারে উল্লে­খ করা হয়েছে, শৈলকুপার পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নাশকতার উদ্দেশ্যে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সমবেত হয়। পরে তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান, বিজুলিয়া গ্রামের মামুন জোয়ার্দ্দার ও পাইকপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনকে আটক করে।

আটকদের ‘স্বীকারোক্তি’তে দেখা যায়, ঠান্ডুু কমিশনার, বাবলু মোল্যা, সাহেব আলীর সঙ্গে ক্যান্সারে আক্রান্ত চুন্নিও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যান।

আবু রেজা সিদ্দিক চুন্নি বিটিসি নিউজকে জানান, তার মূত্রথলির স্বাভাবিক ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানী ঢাকার শ্যামলীর সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিন বিকেলে অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম তার প্রোস্টেড প্লান্ড অপারেশন করেন। পরে পরীক্ষায় প্রোস্টেড ক্যান্সার ধরা পড়ে। বিএনপি নেতা চুন্নি ৩ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের প্যাথলোজি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌহিদুল ইসলামের কাছে ও ১৩ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর মিরপুরের ডেলটা হাসপাতাল এবং ২১ তারিখ ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এস এ খানের অধীনে চিকিৎসা নেন।

গত ৩ অক্টোবর থেকে এখনও তিনি বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ডা. কামরুজ্জামান চৌধূরীর অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান। ৩১ অক্টোবর তার শরীরে ক্যান্সারের কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে এবং ওইদিন রাতে নাশকতার মামলায় বোমা হামলাকারী হিসেবে তাকে আসামি করে শৈলকূপা থানা পুলিশ। চুন্নির এই বক্তব্য সমর্থন করে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের অনকোলোজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার সাফিউল ইসলাম জানান, আবু রেজা সিদ্দিক ওরফে চুন্নি ৩ অক্টোবর থেকে অনকোলোজি বিভাগে ক্যান্সারের কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। ৩১ অক্টোবরও তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়।

মামলার বাদী শৈলকূপা থানার এসআই ব্রজেন কুমার ঘোষ বলেন, বোমা হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে আটকদের ‘জিজ্ঞাসাবাদে’ চুন্নিকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সাক্ষিরাও তার নাম বলেছে।

শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আয়ুবুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে আটকদের ‘স্বীকারোক্তি’তে চুন্নিসহ তাদের আসামি করা হয়। যাচাই-বাছাই চলছে। বিনা অপরাধে কাউকে হয়রানি করা হবে না। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রমাণিত না হলে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য গত ২৬ অক্টোবর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগী আব্দুল বারী ডাক্তার ও চলতি বছরের প্রথম দিকে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির প্রয়াত সভাপতি ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.