মিয়ানমারে তিন দিনে সংঘর্ষে জান্তা বাহিনীর ২৭ সদস্য নিহত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে গত তিন দিনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে জান্তা বাহিনীর ২৭ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া সংঘর্ষে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ৩ সদস্যও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মিয়নমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি নিউজ জানায়, মিয়ানমারের মান্দালয়, সাগাইং ও ম্যাগওয়ে, বাগো এবং তানিনথারি অঞ্চল,সোম ও কাচিন বিদ্রোহীদের হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিদ্রোহীরা সাগাইং অঞ্চলের হোমলিন টাউনশিপের শোয়ে পাই আয়ে শহরটি দখল করতে সক্ষম হয়েছে। এ সময় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অভিযানে জান্তা বাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হয়েছে। শহরটি পুনরুদ্ধারে জান্তা বাহিনী বিমান হামলা চালালেও পিডিএফের কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বৃহস্পতিবার সাগাইং অঞ্চলের সাগাইং টাউনশিপে পিডিএফ বাহিনীর অতর্কিত হামলায় জান্তা বাহিনীর ছয় সদস্য নিহত হয়েছে।
এদিকে পিডিএফ গ্রুপ দাবি করেছে, বুধবার বিকেলে তানিনথারি অঞ্চলে কাওথাউং এলাকায় একটি সেতুর কাছে ৬০ জন সৈন্য বহনকারী দুটি সামরিক যানবাহনে অতর্কিত হামলা চালায় পিডিএফ গোষ্ঠী। এ সময় আটজন সেনা নিহত এবং ছয়জন আহত হয়। পরে জান্তা বাহিনীর প্রচুর পরিমাণ গোলাবারুদ জব্দ করে পিডিএফ গোষ্ঠী।
এদিকে মিয়ানমারের ৩৭টি শহরে মার্শাল ল জারি করেছে দেশটির জান্তা সরকার। এসব শহরের মধ্যে বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত সাগাইন এবং মগওয়ে অঞ্চলও রয়েছে। নতুন করে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার মাত্র একদিন পরই ৩৭টি শহরে মার্শাল ল জারির ঘোষণা এলো। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে শাসনক্ষমতা দখল করে জান্তা বাহিনী। এর পর থেকে দফায় দফায় দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
জান্তা সরকারের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, ওই ৩৭টি শহর এখন থেকে সরাসরি স্থানীয় কামান্ডারের হুকুমে পরিচালিত হবে। ৩৭টি শহরের মধ্যে সাগাইনের ১১টি, মগওয়ে এবং অঞ্চলের ৫টি করে মোট ১০টি শহর। এর বাইরে রয়েছে তানিনথারির ২টি শহর। চিন রাজ্যের ৭টি শহর, কায়াহ রাজ্যের ৪টি, কারেনের ২টি এবং মন রাজ্যের একটি শহর রয়েছে মার্শাল ল জারি করা শহরগুলোর মধ্যে।
মিয়ানমারে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে সহিংস দমননীতি গ্রহণ করে জান্তা সরকার। এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কয়েক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। এই সহিংসতার জেরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে গঠন করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। এরপর থেকেই জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত তারা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.