মিয়ানমারের মংডুতে গোলাগুলি-মর্টার শেলের আওয়াজ, বাড়ি-ঘরে জ্বলছে আগুন

কক্সবাজার প্রতিনিধি: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে প্রচুর গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ এবং বিমান হামলার ঘটনা ঘটছে।
এদিকে আজ শনিবার সকাল থেকে মংডুর কাছাকাছি বলিবাজার, রাসিডং এলাকার বাড়ি-ঘরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় সীমান্তের এপারে কক্সবাজারের টেকনাফের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে। প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া সীমান্তে সংঘাতের পর মিয়ানমারের সরকারি বর্ডার গার্ড পুলিশকে (বিজিপি) হটিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের তমব্রু রাইট ও লেফট ক্যাম্প এবং ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তচৌকির দখল নেয় বিদ্রোহী আরকান আর্মি।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহর মংডুর নিয়ন্ত্রণ নিতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে মংডুর আশপাশের কয়েকটি সীমান্তচৌকির দখল নিয়েছে। মংডু জেলার বিপরীতে এপারের টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, সাবরাং ও টেকনাফ পৌরসভা। তিন দিন পুরো সীমান্ত শান্ত থাকার পর দুই দিন ধরে এই সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের বিকট শব্দে এপার কেঁপে উঠছে।
হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তারেক মাহমুদ রনি বলেন, ‘২০১৭ সালের পর আবারও দাউদাউ আগুনে পুড়ছে মিয়ানমারের আরকান রাজ্য।’
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত থেকে মংডু শহরের আশপাশে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হচ্ছে। মর্টার শেলের বিকট শব্দে এপারের মানুষ ঘুমাতে পারছে না এবং আতঙ্কে আছে।’
মিয়ানমারে সংঘাত: টেকনাফ সীমান্তে ফের গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দমিয়ানমারে সংঘাত: টেকনাফ সীমান্তে ফের গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘তিন দিন সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। বিকট শব্দে মাঝে মাঝে এপারও কেঁপে উঠছে।’
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলীও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বলেন, দুই দিনে লড়াই আগের চেয়ে তীব্র হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে রাখাইনের কয়েকটি স্থানে আগুন দেখা যায়। এ নিয়ে সীমান্তের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কিছু এলাকায় গোলাগুলি ও বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তের কাছাকাছি থাকা লোকজনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
২ বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারি রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কক্সবাজার প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.