মাহশা আমিনি হত্যা: সরকারপন্থীদের মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ফাঁসির দাবি

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পুলিশ হেফাজতে হিজাব আইন লঙ্ঘনের দায়ে মাহশা আমিনি নামের নারীর মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভের বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচি পালন করেছে ইরানের সরকার সমর্থকরা।
শুক্রবার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এসব কর্মসূচিতে হিজাব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের ফাঁসি দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
হিজাব আইনের বিরোধিতা ও মাশা আমিনির হত্যকাণ্ডের বিচারের দাবিতে চলমান বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক করেছে ইরানের সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী বলেছে, বিক্ষোভের নেপথ্যে থাকা শত্রুদের তারা মোকাবিলা করবে। এতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিক্ষোভ দমনে সরকার কঠোর হতে পারে। সেনাবাহিনীর এমন হুমকির পর শুক্রবার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এসব কর্মসূচি থেকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ‘ইসরায়েলি সেনা’ হিসেবে উল্লেখ করছেন সরকার সমর্থকরা। তারা স্লোগান দেন ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছেন কোরআন অবমাননাকারীদের অবশ্যই ফাঁসি দিতে হবে।
গত সপ্তাহে ইরানের কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের দায়ের গ্রেফতার করা হয় কুর্দিস্তানের নারী মাহশা আমিনিকে (২২)। নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।
আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানের কঠোর পোশাকবিধি ও নারীদের চলাচলের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
শুক্রবার ইরানের গোয়েন্দামন্ত্রী মাহমুদ আলাভি হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, দেশদ্রোহীরা ধর্মীয় মূল্যবোধকে পরাজিত করতে চাইছে।
কুর্দিস্তান প্রদেশে আমিনির নিজ শহরে বিক্ষোভ সবচেয়ে জোরালো বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো ইরানে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এই পরিষেবা আংশিক চালু হয়েছে।
হ্যাক্টিভিস্টস নামের হ্যাকারদের একটি গ্রুপও বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, ইতোমধ্যে সরকারিসহ ইরানের ১০০ ওয়েবসাইটে হামলা চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে ২৮৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চলমান বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে কয়েকটি দেশেও। শুক্রবার মাদ্রিদে ইরানি দূতাবাসের সামনে চারজন টপলেস নারী বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
গ্রিসের অ্যাথেন্সে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা বৃহস্পতিবার ইরানি দূতাবাস অভিমুখে মিছিল করেছেন। পুলিশ তাদের আটকে দেয়। একই দিনে কানাডা ও নেদারল্যান্ডসেও বিক্ষোভ করেছেন।
বৃহস্পতিবার একটি এনজিও সংস্থার বরাতে এএফপি জানিয়েছিল, গত ছয় দিনের বিক্ষোভে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.