খুলনা ব্যুরো:দৌলতপুরে আলোচিত যুবদল নেতা ও সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন প্রধান দুই আসামি কাজী রায়হান ইসলাম এবং আসিফ মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং দৌলতপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে তাদের আটক করে।
এই মামলায় এর আগে গ্রেফতারকৃত সজল শেখ ও আলাউদ্দিন এখনও কারাগারে রয়েছেন। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার স্পষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় নিশ্চিত হয়ে তালা উপজেলার মহিলা কলেজের পাশে একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে কাজী রায়হানকে আটক করা হয়। মাহবুব হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সে পলাতক ছিল।” তিনি আরও বলেন, “রায়হানই সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়া ব্যক্তি কি না, তা নিশ্চিত হতে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি পৃথক দল তালা থেকে আসিফ মোল্লাকে আটক করে। ডিবি সূত্রে জানা যায়, “সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল যে, তিনজন যুবক হামলায় অংশ নেয়। আসিফ মোল্লার মুখাবয়বের মিল রয়েছে ফুটেজে থাকা এক যুবকের সঙ্গে।” তবে পুলিশ এখনও তার ভূমিকা নিরূপণে নিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য, ১১ জুলাই দুপুরে নিজ বাসার সামনে প্রাইভেটকার ধোয়ার সময় মাহবুবুর রহমান মোল্লার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় তিনজন যুবক। প্রথমে গুলি, পরে দু’পায়ের রগ কেটে তাকে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ধরণে স্পষ্ট, এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং অত্যন্ত নির্মম। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে তেলিগাতি সীমান্ত হয়ে মূল সড়কে উঠে সাধারণ মানুষের মাঝে মিশে যায়।
সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা তথ্য প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃত সজল ও আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সহায়তা ও তথ্য সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা নিয়ে পুলিশ নিশ্চিত নয়। অপরদিকে, নতুন করে গ্রেফতার হওয়া রায়হান ও আসিফকে নিয়ে তদন্তে গতি এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মাহবুব ছিলেন যুবদলের একজন সক্রিয় নেতা এবং দৌলতপুর এলাকায় জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। হত্যার পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, পুরনো শত্রুতা বা প্রভাব বিস্তারের লড়াই—সবকিছুই এখন পুলিশের অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছে।
ডিবি ও থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের নিয়ে দৌলতপুর, পাইকগাছা ও আরও কিছু এলাকায় অভিযান চালানো হবে। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী এবং বাস্তবায়নকারী কারা, তা চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস দিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান মাশরুর মুর্শেদ। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.