মালয়েশিয়ায় হত্যার শিকার হ্যাপির লাশ সিরাজগঞ্জে পৌছে দাফন সম্পন্ন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: মালয়েশিয়ায় খুন হওয়া পারভেজ মণ্ডল ওরফে হ্যাপি পারভেজ (৪৪) এর লাশ সিরাজগঞ্জের নিজ বাড়িতে পৌঁছেছে। তার জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
গত ২৪ দিন পর গতকাল শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের পিটিআই রোডের কোল গয়লা মহল্লায় হ্যাপির লাশ পৌঁছালে স্বজনরা অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। তিনি গত ৩ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় সহকর্মীদের হাতে নির্মম ভাবে খুন হন। তিনি এ মহল্লার মরহুম শামসুল আলী মণ্ডল ও বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা ছুরাইয়া খাতুনের ছোট ছেলে।
গতকাল শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে একটি কার্গো বিমানে হ্যাপির লাশ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছে। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে সকাল ৯টার দিকে লাশ বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এ দিন জুমা নামাজ পর জানাজা শেষে তার লাশ সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের মালশাপাড়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহতর বড় ভাই বেলকুচি, চৌহালী ও এনায়েতপুর এলাকার সংবাদপত্র এজেন্ট দৌলত মণ্ডল ও মেজো ভাই জামাল উদ্দিন বাপ্পি বলেন, গত ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়ার যহরবারু লাবিস এলাকায় তাকে হত্যার পর ঘাতকেরা লাশ রাস্তায় ফেলে দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রচার করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় ওখানকার পুলিশ তার ৬ সহকর্মীকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার বিষয়টি সামনে আসে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার ৪ জন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ১ জন ও নেপালের একজন। ঘটনার সঙ্গে ১ বাংলাদেশি জড়িত বলেও তারা দাবি করেছেন।
তারা আরও বলেন, ছোট ভাই হ্যাপি পারভেজ জীবিকার তাগিদে ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে থাকার আশায় ১৪ বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তার মৃতদেহ মালায়েশিয়ার রাস্ট্রদুদ মোঃ ফরিদ সাহেবের সহযোগিতায় ২৪ দিনেই বাংলাদেশে এসে পৌছেছে। সেখানকার ইয়াদা কন্সট্রাকশন অ্যান্ড হার্ডওয়্যার এন্টারপ্রাইজ কোম্পানিতে নির্মাণ কর্মী হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী ঝিনা খাতুন (৩৮) জানান, তার স্বামী হ্যাপি পারভেজ একজন ন্যায় পরায়ণ, ধার্মিক ও নামাজি ব্যক্তি ছিলেন। কোন অন্যায় দেখলে তার প্রতিবাদ করতেন। এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। তার সহকর্মীদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে তারা নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। হ
ত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে লাশ সড়কে ফেলে দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রচার করে। অথচ তার গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জি ও পরনে সাধারণ লুঙ্গি ছিল। লুঙ্গি-গেঞ্জি পড়ে সে কখনই বাইরে বের হতো না। এটা কিছুতেই সড়ক দুর্ঘটনা নয়। এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি স্বামী হত্যার বিচার চান।
কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নাদিয়া পারভীন (১৮) ও স্কুল পড়ুয়া ছেলে সিয়াম হোসেন (১৬) কে নিয়ে তিনি এখন কি করে খাবেন তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে নানা রোগে আক্রান্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মাতা ছুরাইয়া খাতুন সন্তানের শোকে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় তারা এ হত্যার বিচার ও সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি মোসুলতান হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.