মামলা করতে থানায় শিক্ষকদের দুইগ্রুপ, গুরুদাসপুরে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ গুরুদাসপুরে প্রাথমিক শিক্ষকদের কোন্দলের শিকার শিক্ষার্থীরা


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে শিক্ষকদের মধ্যে চলছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। ফলে বিপাকে পড়েছে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আসা কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা।

একদিকে রয়েছে বিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও শিশু শিক্ষার্থীদের মারধর করায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিযোগ আর অন্যদিকে কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে সরকারি বিধি অমান্য করে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে বিক্ষোভ করায় থানায় শিক্ষকদের মামলা দায়েরের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আনারুল ইসলাম।

এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক বিপ্লব রানার অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে মৌখিকভাবে দাবি জানায় পরীক্ষার্থীরা। রোববার ওই বিক্ষোভ চলাকালীন সময় বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় ২য় শ্রেণির সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার পরীক্ষার্থীদের হাতে ৫ম শ্রেণির প্রশ্নপত্র তুলে দেয়াসহ শিক্ষার্থীদের ওপর মারধর করার অভিযোগ করা হয় শিক্ষক মো. বিপ্লবের বিরুদ্ধে।

বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির পরীক্ষার্থী জনি, মিরাজ, রাজদুল, সাব্বিরসহ অনেকে জানায়, বিপ্লব স্যার কথায় কথায় আমাদের মারধর করেন। রোববার সকালে ২য় শ্রেণির পরীক্ষায় ৫ম শ্রেণির বাংলা প্রশ্নপত্র দেন তিনি। প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি আমাদের কথায় গুরুত্ব দেননি। এ নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ মিন্টু কথা বলতে গেলে তার সাথেও অশ্লীল ব্যবহার করা হয় বলে জানা গেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদ রানা, সুফিয়া খাতুন, সম্পা রানী ও ঝর্ণা খাতুন বিটিসি নিউজকে বলেন, শিক্ষক বিপ্লব রানা আমাদের সামনেই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তবে প্রশ্নপত্রের বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন ও শিক্ষক বিপ্লবের মধ্যে তর্কাতর্কি হচ্ছিল। এরই মধ্যে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়া বাদ দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।

এ ব্যাপারে সভাপতি বেনজির আহমেদ মিন্টু বিটিসি নিউজকে বলেন, শিক্ষক বিপ্লব রানা বিভিন্ন সময় ছাত্র-ছাত্রীদের মারধরসহ স্কুলে অনিয়মিতভাবে আসা যাওয়া, পাঠদানে অবহেলা, ১৫ আগস্টে বিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন না করা এবং ২য় শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার্থীদের হাতে ৫ম শ্রেণির প্রশ্নপত্র তুলে দেয়ার বিষয়ে কথা বলতে গেলে প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন ও শিক্ষক বিপ্লব রানা বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে খারাপ আচরন করেন।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।

শিক্ষার্থী অভিভাবক আনিসুর রহমান, কবাদ আলী ও ইকবাল বিটিসি নিউজকে বলেন, শিক্ষক বিপ্লবের বিরুদ্ধে তাদের শিশু সন্তানেরা প্রায়ই মারধরের অভিযোগ করতো। এখনই সময় বিচার চাওয়ার। আমরা প্রধান শিক্ষিকাসহ শিক্ষক বিপ্লবের অপসারণ দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব রানাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।

তবে সরকারি বিধি অমান্য করে পরীক্ষার সময় স্কুলের পরীক্ষার্থীদের জোরপূর্বক উপজেলা পরিষদে নিয়ে যায় বেনজির আহমেদ মিন্টু। পরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম রফিকুল ইসলাম ও এসিল্যান্ড মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান স্কুলের সভাপতির কথায় পাত্তা না দিয়ে তাৎক্ষনিক ওইসব শিক্ষার্থীদের স্কুলে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করান বলে তিনি জানান।

আজ সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনিও থানায় সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

গুরুদাসপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনারুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.