মাদকের অভয়ারণ্য বেলকুচির ধুকুরিয়াবেড়া ও দৌলতপুর ইউনিয়ন

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: হাত বাড়ালেই মেলে নানা প্রকার মাদক। মাদকের জালে জড়াচ্ছে উঠতি বয়সের যুব সমাজ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চালাচ্ছে রমরমা মাদক ব্যবসা।
এমন দৃশ্য একদিনের নয়, নিত্যদিনের। অভিযোগ, বেলকুচি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল নিরিবিলি পল্লী এলাকা হওয়ার সুবাদে অনেকেই এ কারবারে জড়িত। বড়দের পাশাপাশি মাদকের আগ্রাসনে গ্রাস করেছে উঠতি বয়সের যুবকদের।
এছাড়াও বেলকুচি থানা থেকে ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের লহ্মীপুর, পিরার চর লহ্মীপুর দুরুত্ব বেশি এবং পাশেই উল্লাপাড়া ও শাহজাদপর থানা এলাকা হওয়ায় মাদকের ছোট বড় চালান এদিক দিয়েই সরবরাহ হয়ে থাকে। মানুষের আনাগোনা কম থাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মা বাড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীরা জানান, এই এলাকায় এখন অনেকেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
স্থানীয়রা ইঙ্গিত দিয়ে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কিছু ব্যক্তিবর্গের নামও প্রকাশ করেন, এদের মধ্যে ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নে লহ্মীপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সোহেল রানা, ফজর আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম, জসিম সরকারের ছেলে আব্দুল হামিদ, নেফাজ আকন্দের ছেলে ছাইদুল ইসলাম, বহুদ আলীর ছেলে জেহাদুল ইসলামসহ আরও অনেকেই এখন মাদক ব্যবসার সাথে ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত।
আবার কেউ কেউ বলছেন, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ছত্রছায়ায় এরা মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন। এদের মধ্যে সোহেল রানার বাড়িতে  ইতিপূর্বে সিভিলে প্রশাসন গেলে তাদেরকে হ্যাস্তন্যস্ত করলে স্থানীয় প্রশাসন এসে তাকে আটক করে বলে এমনও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে আর একটি সূত্রে জানাযায়, বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আংশিক আজুগড়া চর ও জামাত মোর এলাকার জামাত আলীর ছেলে সমেশ আলী, মোন্নাফের ছেলে আমির হামজা, শাহজাহানের ছেলে ইউসুফ আলী, সন্তোষ মোল্লার ছেলে আবু কালাম, শহিদ ব্যাপারীর ছেলে সাইদুল ইসলাম, দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। স্থানীয়রা আরও বলেন, প্রশাসনের অনেকেই জানে তবে থানা সদর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং প্রমানের অভাবে হয়তো সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারছেনা।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে জানাযায়, লহ্মীপুর গ্রামে চলছে অবাধে মাদক ব্যবসা। আর এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিচরণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। কেউ কিছু বললে তাদের ওপর নেমে আসে খড়গ। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এসমস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের তেমন দৃশ্যমান আয়ের উৎস না থাকলেও এরা রাতারাতি মাদক ব্যবসা করে জায়গা, জমি, ভবন রাতারাতি আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন।
এই এলাকায় মাদক কারবারিদের জমজমাট ব্যবসার নিরাপদ স্থান হওয়ায় নির্বিঘ্নে ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে এবং সচেতন মহলের মাধ্যমে জানাযায়, এখানে বেশ কিছু মেয়ে মানুষ দিয়েও জমজমাট মাদক ব্যবসা করা হয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একজন সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক কারবার চলে, এমন খবর স্থানীয় প্রশাসনের কিছু লোক জানা সত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয় না তা বোধগম্য নয়। এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মাদক ব্যবসা বন্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বেলকুচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজমিলুর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোন মাদক ব্যবসায়ী ধরা পড়লে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। মাদক ব্যবসায়ী যেই হোক না কেন, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.