মাইকেল জ্যাকসন ‘কিং অব পপ’ চলে যাওয়ার ১৩ বছর আজ

বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: মাইকেল জ্যাকসন পৃথিবীর অন্যতম সফল সংগীত তারকা। তাকে বলা হয় ‘কিং অব পপ’। সঙ্গীতের নতুন এক ধারা, গানের কথা, গানের সঙ্গে নাচ, তার পোশাক, মঞ্চে তার পরিবেশনা সব কিছুই ছিল দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয়। বিশ্ববিখ্যাত এই পপ সম্রাটের আজ ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
২০০৯ সালের ২৫ জুন এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি দেন এই কিংবদন্তি।
মাইকেল জ্যাকসন শুধু গান আর নাচের মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। নিজের গানের কথা, সুর থেকে শুরু করে গানের মিউজিকও করেছেন। এমনকি তিনি মিউজিক ভিডিও নির্মাণের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। তার গানের মিউজিক ভিডিওগুলো যেন এক একটা চলচ্চিত্র।
মাইকেল জ্যাকসনের পুরো নাম মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন। ১৯৫৮ সালের ২৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকান-আমেরিকান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই পপ সম্রাট। জোসেফ ওয়াল্টার জ্যাকসন এবং ক্যাথরিন জ্যাকসন দম্পত্তির সন্তান তিনি। তার বাবা জো জ্যাকসন পেশায় ছিলেন ইস্পাত শ্রমিক। তিনি মুষ্টিযোদ্ধাও ছিলেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একটি ব্যান্ডদলে গিটার বাজাতেন। মাইকেলের মা ক্যাথরিন জ্যাকসন বাড়তি উপার্জনের জন্য খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। পিয়ানো বাজানোতেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন ক্যাথরিন।
জ্যাকসনের ডাকনাম ছিল ওয়াকো জ্যাকো। কিন্তু নামটি খুবই অপছন্দ ছিল জ্যাকসনের। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে অষ্টম ছিলেন তিনি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, মাইকেল জ্যাকসনের সবাই কোনো না কোনো সময় সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৩ সালে ৫ ভাই-বোন মিলে ‘জ্যাকসন ফাইভ’নামক ব্যান্ড দল গঠন করেন। তখন মাইকেল জ্যাকসনের বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর। সেই থেকে সঙ্গীতাঙ্গনে তার পথচলা শুরু।
১৯৭১ সাল থেকে জ্যাকসন একক শিল্পী হিসাবে গান গাইতে শুরু করেন। তার গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে।
সেগুলো হলো: ‘অফ দ্য ওয়াল (১৯৭৯), থ্রিলার (১৯৮২), ব্যাড (১৯৮৭), ডেঞ্জারাস (১৯৯১) এবং হিস্টরি (১৯৯৫)। এর মধ্যে ‘থ্রিলার’ আজ পর্যন্ত ১১২ মিলিয়নের উপর বিক্রি হয়েছে, যা সর্বোচ্চ বিক্রিত হওয়া অ্যালবাম।
বিশ্ব সংগীতের ইতিহাসে অমর মাইকেল জ্যাকসন। আশির দশকে জ্যাকসন জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন শিল্পী, যিনি এমটিভিতে এত জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, তার গানের ভিডিওর জন্যই এমটিভির ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। গানের সঙ্গে জ্যাকসনের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রয়েছে রোবোট ও মুনওয়াক।
জানা যায়, মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় জ্যাকসনের। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে শোরগোল পড়ে যায়। ভেঙে পড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। মাইকেল জ্যাকসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে তার ভক্ত ও সাধারণ মানুষ গুগলে সার্চ শুরু করে।
মাইকেল জ্যাকসন শব্দটি মিলিয়ন মিলিয়ন বার ইনপুট হওয়ায় গুগল কর্তৃপক্ষ ভাবে, তাদের সার্চ ইঞ্জিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যার কারণে তার মৃত্যুর দিনে আধঘণ্টা বন্ধ থাকে গুগুল। কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম।
সংগীতের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিলেন ‘পপ কিং’ মাইকেল জ্যাকসন। এক আসরে এতগুলো গ্র্যামি পুরস্কার ঝুলিতে ভরার রেকর্ড এত বছরেও ভাঙতে পারেননি আর কোনো সংগীতশিল্পী। জীবদ্দশায় মোট ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন জ্যাকসন।
তিনিই সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড ও নমিনেশন পাওয়া তারকা। এ জন্য হলিউড ওয়াক অব ফেমে ঠাঁই পেয়েছে তার নামে দুটি তারা। একটি তার নিজের জন্য। আরেকটি জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.