মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ করার ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা ২৭ তারিখে যে মহাসমাবেশ ডেকেছি, সেই মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। কোনও চক্রান্ত করে, কোনও ষড়যন্ত্র করে, কোনও সহিংসতা করে এই মহাসমাবেশ নস্যাৎ করা যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাতে চাই কর্তৃপক্ষের কাছে, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার সব ব্যবস্থা আপনারা করবেন। অন্যথায়, সব দায়দায়িত্ব সরকারকে, কর্তৃপক্ষকে এবং যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের বহন করতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকালে আইনজীবীদের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা’ শীর্ষক এই আইনজীবী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কী ভয়ংকর কথা। কোন সময়ে? যখন জনগণ জেগে উঠছে, যখন জনগণ তাদের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করেছে, তাদের অধিকার আদায়ের জন্য—ঠিক সেই সময়ে এই কথা বলে তারা নতুন একটা চক্রান্ত, একটা ষড়যন্ত্র শুরু করবার পাঁয়তারা করছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই—এসব কথা বলে আপনারা যদি আবার জনগণের ওপর অস্ত্র ব্যবহার করেন, তার সব দায়দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে এবং জনগণ তার উত্তর দেবে।’
বৃহস্পতিবারের মহাসমাবেশ রুখে দিতে সরকার নতুন চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এই যে রাজনৈতিক আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে আন্দোলন, মানুষের যে উত্থান—এটাকে রুখে দেওয়ার জন্য তারা (সরকার) একটা নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব একটা সভায় বলেছেন, বিএনপি বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্যে সীমান্তে অস্ত্র জড়ো করছে।’
জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, ‘দেশ এখন সংবিধানের অধীন নয়, যারা ক্ষমতায় আছে—তারা জনগণের সম্মতি নিয়ে আসেনি। বেআইনিভাবে আছে, অবৈধভাবে আছে। এই সরকার অবৈধ। আপনাদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আন্দোলনে ঢেউ লেগেছে। সেই সময়ে আইনজীবীরা আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসটা এরকম যে সবসময় পেশাজীবীরা বিশেষ বিশেষ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং আন্দোলন জিতেছে। এখন পরিস্থিতিটা একটু আলাদা। ব্যবসায়ীরা সবাই মিটিং করেছেন এবং সবাই মিলে বলেছেন—প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আরেক টার্ম থাকতে হবে…। বিরাট চাপদাড়ি রেখে ব্যবসায়ী একজন নেতা নতুন করে স্লোগান দেন, বারবার দরকার… পরেরটা তো এখানে বলা যাবে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘লড়াইটা খুব পরিষ্কার। এই লড়াইয়ে শাসকরা ভয় দেখাতে চাচ্ছেন। আগামী ২৭ তারিখ সব বিরোধী দল রাজপথে নামবে, সমাবেশ, মহাসমাবেশ, মহাজাগরণ হবে। ২৭ তারিখ হচ্ছে জনতার মুক্তির সমাবেশ। কাজেই সব ভয় উপেক্ষা করে রাজপথ দখলে নিন। জনতার রাজপথ জনতা দখল নিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা ঘটাবে। সেই সংগ্রামের প্রস্তুতি আপনারা নিন।’
ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, সৈয়দ মামুন মাহবুবের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এজেডএম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, মহসিন রশিদ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জসিম উদ্দিন সরকার, শাহ আহমেদ বাদল, আবদুল জাব্বার ভুঁইয়া, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মহসিন মিয়া, খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ আলী, ওমর ফারুক ফারুকী, আবদুল লতিফ তালুকদার প্রমুখ আইনজীবী সমাবেশে বক্তব্য দেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.