ভূয়া-জাল ভাউচারে শিবগঞ্জের সাতরশিয়া স্কুলের উন্নয়নে বরাদ্দ অর্থ লোপাট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:  চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের ৬২নং সাতরশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্করণের জন্য বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে।

ভূয়া ও জাল ভাউচার দেখিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ এবং আয়-ব্যয় হিসাব দেখিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন করা হয়নি। সকল অর্থই নিজ পকেটস্থ করেছেন সাতরশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন। ঘটনা জানাজানি হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলাচ্ছেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৮/০৪/২০১০ থেকে ২৮/০৯/২০১০ সাল পর্যন্ত ৫ মাস প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মোশাররফ হোসেন। আর সেই সময়ে বিদ্যালয় সংস্করণের নামে বরাদ্দ হয় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠানের কোন সংস্কার কাজ না করে এবং কাউকে বিষয়টি না জানিয়ে পুরো টাকায় আত্মসাৎ করে নেন এ প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের বাড়ি মনাকষা ইউনিয়নের সাতরশিয়া গ্রামেই। বর্তমানে তিনি মনাকষা ইউনিয়নের ১২০ নম্বর মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

তাঁর মেয়াদকালে বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ডালিম (মেম্বার) বিটিসি নিউজকে জানান, সে সময়ে বিদ্যালয়ের নামে আসা ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন মাস্টার একাই আত্মসাৎ করেছেন।

বিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি ইট’ও ক্রয় করেননি তিনি। কোন সংস্কার কাজও করেন নি। বিদ্যালয়ের এই অর্থ ফেরত ও অর্থ আত্মসাতের জন্য কঠোর শাস্তির হওয়া প্রয়োজন। একই অভিযোগ করেন ৬২নং সাতরশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, মেসার্স রানা ব্রিকস, মেসার্স মনাকষা ট্রেডিং ও হার্ডওয়্যার দোকানের ভূয়া বিল ভাউচার নিজেই তৈরি করে ইট, সিমেন্ট, বালিসহ অন্যান্য দ্রব্যের পরিমাণ ও দাম লিখে ব্যয়ের হিসাব দেখিয়েছেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোশাররফ। তিনি আরও জানান, বিল ভাউচারগুলোতে কোন দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালিকের স্বাক্ষর নেই। প্রতিষ্ঠান মালিকের স্বাক্ষরের জায়গায় প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন।

বিল ভাউচারগুলোতে কোন প্রকার তারিখ ছাড়াই অনুমোদিত ও পরিশোধিত দেখিয়ে নিজেই সীল-স্বাক্ষরও করেছেন প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন। অভিযোগের সত্যতা এবং প্রমাণ পাওয়া গেছে অত্র বিদ্যালয়ের নথিপত্রে। প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে সাতরশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্করণের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রাও।

স্থানীয়দের দাবি, সঠিক তদন্ত করে আত্মসাৎ হওয়া টাকা উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কাজে লাগানো হোক। এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোশাররফ হোসেন তার বিরুদ্ধে হওয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বিটিসি নিউজকে জানান, একটি মহল আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্যই এসব অভিযোগ করেছে।

দায়িত্ব পালনকালে পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে সঙ্গে নিয়েই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালিয়েছি। তবে বিল-ভাউচার জালিয়াতির ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.