ভাসমান বেদের ছদ্মবেশে ইয়াবা কারবারি

ঢাকা প্রতিনিধি: পাঁচ তরুণ। তারিকুল ইসলাম, সিনবাদ, মিম মিয়া, ইমন ও মনির। সবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। বাপ-দাদার আমলের বেদে জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান আগেই। কিন্তু ইয়াবা কারবারিদের খপ্পরে পড়ে লাভের আশায় ফের ভাসমান বেদের ছদ্মবেশ ধারণ করে তারা।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে বেদের ছদ্মবেশে ইয়াবার বড় চালান ঢাকায় পৌঁছে দিত তারা।
গত মঙ্গলবার (০৪ মে) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র‌্যাব-২ এর একটি দল।
এ সময় উদ্ধার করা হয় ৭৭ হাজার পিস ইয়াবা। গতকাল বুধবার (০৫ মে) বিকালে কাওরান বাজারে অবস্থিত র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে একদল মাদক কারবারি মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রিজ এলাকায় হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে আসছে।
অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় ছদ্মবেশ ধারণের সরঞ্জামাদি, রান্নার হাঁড়ি-পাতিল, বালতি, বহনযোগ্য ডিসপ্লে র্যাক ও নানা ধরনের ইমিটেশন অলংকার উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-২-এর সিও জানান, তারা নিয়মিত কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকা ও সমুদ্র পথ দিয়ে আসা ইয়াবা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করত। মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে অভিনব কায়দা হিসেবে বেদের ছদ্মবেশ ধারণ করে মাদক বহন করত। মাদক পরিবহনের জন্য টিনের তৈরি সহজে বহনযোগ্য রান্নার চুলার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ইয়াবা রেখে তা ঝালাই করে জোড়া লাগিয়ে দিত। মাদকের চালান কক্সবাজার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কখনোই মহাসড়ক ব্যবহার করত না।
ইমরান উল্লাহ বলেন, কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে তারা মহাসড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে গ্রামের ভেতরের রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা, টেম্পো ব্যবহার করে পথ পাড়ি দিত।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার ক্ষেত্রে তারা চট্টগ্রাম সিটি গেটসহ বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট এড়াতে প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে হাটহাজারী-মানিকছড়ি-গুইমারা-রামগড় হয়ে ফেনী আসত। সেখান থেকে তারা নোয়াখালীর-চৌমুহনী-সোনাইমুরী ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ হয়ে মতলব লঞ্চঘাট পর্যন্ত আসত। দ্বিতীয় ধাপে সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে মুন্সীগঞ্জ হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করত।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ সময় তারা বেদের জীবন-যাপন করত। সাধারণ মানুষের সন্দেহ দূর করতে পথের মাঝে বিভিন্ন মনিহারি দ্রব্য যেমন-চুড়ি, কড়ি, চুল বাঁধার ফিতা, শিশুদের কোমরে বাঁধার ঘণ্টা, চেন, সেফটি পিন, বাতের ব্যথার রাবার রিং ইত্যাদি বিক্রি করত।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.