ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে পানিবন্দী ৫০ হাজারের বেশি মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় চর ও নদের নিম্নাঞ্চলগুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনক হারে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, ধরলা অববাহিকার প্রায় ৫০ সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এই অঞ্চলে স্বল্প মেয়াদে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি।
প্লাবিত এলাকার অসংখ্য ঘর-বাড়ি শাক-সবজি, পাটসহ মৌসুমি ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। চারিদিকে পানি থাকায় দূর্ভোগে পরেছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন।
বাড়ী-ঘরে পানি উঠায় চৌকি কিংবা উঁচু মাচায় অবস্থান করার পাশাপাশি অনেক পরিবার উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদি পশুগুলোকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে প্লাবিত এলাকার বানভাসীরা।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বিটিসি নিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়ে আমার পুরো ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ইউনিয়নের অন্তত দেড় সহস্রাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে প্রায় ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবা, বতুয়াতলি মূসার চর, ব্যাপারিপাড়া নতুন চর এবং পূর্ব ও পশ্চিম মশালের চরের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বাধ্য হয়ে এসব পরিবারের অনেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকাতেই রান্না ও খাবার সেরে নিচ্ছেন বানভাসী মানুষজন।
উলিপুর ইউএনও মো. আতাউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দী পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়াও দুর্গত পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বিটিসি নিউজকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর ও নাগেশ্বরীতে খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ইতিমধ্যে দুর্গত এলাকায় এক হাজার ২শ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার তেল ও ১ কেজি লবণসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটায় ১৫০ জন পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। আবারও পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে আমরা সেদিকে নজর রাখছি। পুরো জেলা জুড়ে ৪ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.