ভারতে তীব্র দাবদাহ শেষে স্বস্তির বৃষ্টি

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা কয়েক সপ্তাহের তীব্র দাবদাহ শেষে বৃষ্টির মুখ দেখল ভারতের নয়াদিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরাখণ্ডসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ।
বুধবার (০৪ মে) বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি নেমে এসেছে বাসিন্দাদের মাঝে। তবে আগ্রা ও নাগপুরসহ বেশ কিছু অঞ্চলে দাবদাহের দাপট এখনও অব্যাহত রয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
স্মরণকালের ভয়াবহ দাবদাহে বিপর্যন্ত ভারত। তীব্র গরমে পুড়ছে বিভিন্ন রাজ্য। এপ্রিল মাসে উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য-ভারতে ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের মার্চ মাসের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার চেয়ে গড়ে ১.৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। আর এপ্রিল মাসের সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ভারতে মার্চ মাসে বৃষ্টির ঘাটতি ছিল প্রায় ৭১ শতাংশ। ১১৪ বছরের মধ্যে চেয়ে কম বৃষ্টির রেকর্ড রয়েছে মাত্র দুইবার। সাধারণভাবে মার্চ মাসে দেশে গড়ে ৩০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এবার মার্চে ভারতে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৮.৯ মিলিমিটার।
এর আগে ১৯০৮ সালের মার্চে ভারতে বৃষ্টি হয় ৮.৭ মিলিমিটার। ১৯০৯ সালের মার্চে বৃষ্টি হয় ৭.২ মিলিমিটার। এপ্রিল মাসে দিল্লির গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। যা গত ৭২ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় উষ্ণতম মাস। এর ফলে রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র দাবদাহ বয়ে যায়। সেই সঙ্গে দেখা দেয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং বা ব্ল্যাকআউট। সবমিলিয়ে একটা হাঁসফাঁস অবস্থা।
চলতি সপ্তাহে আবহাওয়া দফতর এক পূর্বাভাসে জানায়, রাজধানী দিল্লিতে বজ্রসহ বৃষ্টি ও ধূলিঝড় হতে পারে। তীব্র দাবদাহে রাজধানী দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশসহ উত্তরাঞ্চলে নাভিশ্বাস যখন চরমে তখন আবহাওয়া অফিসের সেই পূর্বাভাস সত্যি করে আসে স্বস্তির বৃষ্টি।
নিউজ১৮ জানায়, বুধবার (০৪ মে) দুপুর ২টার পর থেকেই দিল্লির রোহিনী, পিতামপুরা ও পশ্চিম বিহারে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর দক্ষিণ দিল্লিতেও শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত।
এদিন উত্তরাঞ্চলের পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে ভারি বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল ঝড় আছড়ে পড়ে। বৃষ্টিতে হাঁসফাঁস করা গরম থেকে কিছুটা মুক্তি পান বাসিন্দারা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় আগামী চার দিন হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় তুষারপাতের খবর পাওয়া গেছে। সিমলায় সর্বোচ্চ ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চাম্বা এবং কারগা জেলায় মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিমলা, মান্ডি, কুল্লু এবং সোলানসহ চারটি জেলায় মাঝারি শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে উত্তরাঞ্চলে স্বস্তি মিললেও আগ্রা, নাগপুরসহ বেশ কিছু অঞ্চলে গ্রীষ্মের দাপট অব্যাহত রয়েছে। দাবদাহ থেকে বাঁচতে এদিনও বিভিন্ন উপায়ে নিজেদের একটু ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টার কমতি ছিল না।
আগামী আরও কয়েকদিন মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, পশ্চিম রাজস্থান, উত্তর-পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কিছু কিছু অংশে বিচ্ছিন্নভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.