ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন (এনআরসি) নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

বিটিসি নিউজ ডেস্ক:  নাগরিকত্ব আইন সংশোধন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এর কোনো প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি আমিরাত সফর করে আসা শেখ হাসিনা গালফ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন।

মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদপত্রটির অনলাইন সংস্করণে গতকাল শনিবার (১৮ জানুয়ারী) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। ভারতের বিতর্কিত আইনটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বুঝতে পারছি না, কেন এটা করা হল। এর কোনো প্রয়োজন ছিল না।

বাংলাদেশে ১ কোটি ৬০ লক্ষ হিন্দু (মোট জনসংখ্যার ১০.৭ শতাংশ) থাকার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশীদের ভারতে পাড়ি দেওয়ার বিষয়টিও নাকচ করেন।

নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের পর ভারত থেকেও বাংলাদেশে কেউ আসছে না জানালেও তিনি বলেন, তবে ভারতের মধ্যেই মানুষকে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। এনিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এটাই বলে আসছে যে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন কিংবা নাগরিকপঞ্জি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত সরকারও বলে আসছে।

এসময় গত বছরের অক্টোবরে নয়া দিল্লি সফরের সময়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বস্ত করেছেন যে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ মাত্রায় আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা নানা ক্ষেত্রে আরও প্রসারিত হচ্ছে।

সাক্ষাৎকার রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যার শুরুটা যেহেতু মিয়ানমারে, সেহেতু তাদেরই সমাধান করতে হবে। মিয়ানমারে নিপীড়নের স্বীকার হয়ে ১১ লাখের বেশী রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। তাদের ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থেকে তারা ফিরতে চাইছে না। এসময় প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের অবসান না হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। বাংলাদেশ কয়লা বিদ্যুতের দিকে মনোযোগ বাড়ালেও এক্ষেত্রে পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ এতদিন গ্যাসের উপর নির্ভর করত। কিন্তু গ্যাস ফুরিয়ে আসায় উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে এখন কয়লাসহ অন্য উৎসের দিকে নজর দিতে হচ্ছে।

বিশাল জনসংখ্যার দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেই সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কীভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তাও গালফ নিউজকে তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.